চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

বুদ্ধিবৃত্তিক প্যাকেজ

    হিউম্যান বিয়িং শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব:---- পুরো পাশ্চাত্য সভ্যতা যেই দার্শনিক সত্তার উপর দাঁড়িয়ে আছে তাকে বলা হয় হিউম্যান বিয়িং। পশ্চিমা সামাজিক বিজ্ঞান এই নির্দিষ্ট সত্তাকে নিয়েই কাজ করে। সামাজিক বিজ্ঞানের মতো ব্যক্তির এই নির্দিষ্ট ধারণা এবং সংজ্ঞাও এনলাইটেনমেন্টের ফসল। হিউম্যান বিয়িং নিছক কোন মানুষ না। সে এক নির্দিষ্ট চিন্তার, বিশেষ ধরনের মানুষ। হিউম্যান বিয়িং এমন কেউ, যে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে স্বতঃসিদ্ধ সত্য হিসেবে মেনে নেয়। যে নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অমুখাপেক্ষী মনে করে। বিভিন্ন জীবনব্যবস্থা ও দর্শনকে সে মূল্যায়ন করে কেবল একটি মাপকাঠি দিয়ে। সেটা হলো মানবিক চাহিদা। মানবিক চাহিদা ও কামনা-বাসনার সীমাহীন পূর্ণতাই এই হিউম্যান বিয়িং-এর জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।হিউম্যান বিয়িং হলো পাশ্চাত্যের ক্রীতদাস। সে পাশ্চাত্যের দাসত্বকেই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছে। সে নিজেকে সব জায়গায় একজন পশ্চিমা দাস হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে। চেতনে কিংবা অবচেতনে সে পুঁজিবাদের গোলামি করে। বিস্তারিত জানতে বইটি পড়ুন। ইসলাম ও মুক্তচিন্তা:---- মনে রাখতে হবে পশ্চিমা জনপ্রিয় মতবাদগুলাে মুমিনদের জন্য একেকটা ফিতনা৷ মুমিনগণ যেখানেই নির্যাতিত হয়েছেন, এসব মতবাদ তাদের জন্য কোনাে কল্যাণ বয়ে আনেনি। উপরন্তু এসব মতবাদ মুসলিমদের জন্য পরাধীনতা, কুফরের শাসন, নির্যাতন ও জুলুমের রাস্তাগুলাে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আজকের চীনের উইঘুর মুসলিমদের অবস্থা তার জ্বলন্ত প্রমাণ৷ কাজেই এসব মতবাদ ইসলামাইজেশন করার মাঝে হীনম্মন্যতা প্রকাশের জৈবিক সুখ আছে বটে কিন্তু কল্যাণ নেই৷ এসব ভ্রষ্ট মতবাদ। ইসলামাইজেশন করার মধ্য দিয়ে আমরা যে মানবিকতার কাতারে দাঁড়াতে চাই, সেখানে কখনােই আমাদের এতটুকু জায়গা হবে না এবং সেটা আমাদের জায়গাও নয়। তাই পশ্চিমা ধ্যান-ধারণার কোনাে তত্ত্ব যদি আক্ষরিক অর্থেইসলামের সাথে মিলেও যায় তবে তাকে আক্ষরিকতায় গুলিয়ে না ফেলে স্বতন্ত্রভাবে ইসলামি রূপরেখার জায়গা থেকে উপস্থাপন করা উচিত৷ পরকালীন কল্যাণের বিশ্বাস ধূসর হয়ে গেলে-মানুষের কাছে ইসলামের বিধানাবলি, এর প্রয়ােগনীতি এবং এক্ষেত্রে কিছুটা বলপ্রয়ােগ-বাড়াবাড়ি, অমানবিক ও ক্ষেত্রবিশেষ হিংস্র ও বর্বর মনে হতে পারে৷ এটা মুক্তচিন্তার প্রভাব৷ এর প্রভাবেই মানুষ আল্লাহর পরিবর্তে নতুন প্রভুত্বের সন্ধান করে। তারা তাদের এই প্রভুকে দৃশ্যমান কোনাে পূজা দেয় না বটে; তবে এর মানদণ্ডেই বিচার করে সাদা-কালাে, সত্য-মিথ্যা। কিন্তু সাময়িক বলপ্রয়ােগ দ্বারা যদি কোনাে জাতিগােষ্ঠীর পরকালীন শাস্তি থেকে বেঁচে যাওয়ার রাস্তা উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং তা যদি আল্লাহর হুকুমেই হয়, তবে এরচেয়ে কল্যাণকর কাজ কী হতে পারে! ইসলাম ও কোয়ান্টাম মেথড:--- কোয়ান্টাম মেথড— নামটার সাথে হয়ত আমরা অনেকেই পরিচিত। কিন্তু এই মেথডের হাল-হাকিকত কী, এই প্রশ্ন করলে সদুত্তর খুব কমই মিলবে। যারা এই মেথডে দীক্ষা নিয়েছেন, তাদেরই বা কত জন জানেন মেথডের ভেতরকার কথা। আর যারা শুধু নামই শুনে আসছেন, তাদের কথা তো বাদই দিলাম। আমার আশপাশে এমন কাউকেই আমি দেখি না, যাদের কাছে এই মেথড সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে “তৃপ্তিদায়ক” উত্তর পাওয়া যাবে। এই উদাসিনতার কারণ হতে পারে অনেক। হয়ত আমাদের ভেতরে এমন প্রয়োজনবোধই(!) তৈরী হয় নি, যার ফলে এই মেথড সম্পর্কে তলিয়ে দেখার তাগিদ অনুভব করবো। অথবা আমাদের আগ্রহ তৈরী হলেও হাতের কাছে জানবার মতো নির্ভরযোগ্য কোন মাধ্যমই নেই। কিংবা তলিয়ে দেখার আগেই হয়ত আমরাই তলিয়ে গেছি এই মেথডের চোরাবালিতে। মূলত মানুষের মধ্যে প্রথা ভাঙার একটা সুপ্ত ইচ্ছা লুকায়িত থাকে। একটু ভিন্ন হতে সকলেই চায়। নিজ নিজ অবস্থান ও সামর্থ অনুযায়ী সকলেই ভিন্ন রূপ ধারণ করে। . মানুষের এই ইচ্ছাকে পুঁজি করেই যুগে যুগে বাতিলদের মহড়া দেখা গেছে। ইসলামকে মডিফাই করে, একটু ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে; নতুন ইসলাম হাজির করার চেষ্টা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। কোন কোন বাতিলপন্থী সব ধর্মের সাথে ইসলামকে মিশিয়ে একটা জগাখিচুরি তৈরী করেছে। আর উৎসুক লোকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে তার উপর। . যুগে যুগে নতুন নামে ও ভিন্ন ঢঙয়ে বাতিল প্রকাশ পেলেও আদতে তা ছিলো এক ও অভিন্ন। . কোয়ান্টাম মেথডও অনুরূপ একটা নতুন ধারা—যা তাওহীদ ও শিরকের জগাখিচুরি তৈরী করেছে। . যদি বলা হয়, কোয়ান্টাম মেথড ইসলামের সাথে সাংঘর্ষি; তবে কেউ কেউ তেড়ে আসবেন। তারা বলবেন: কোয়ান্টাম মেথড কি কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান! যদি না হয়, তাহলে এর সাথে ধর্মের মিল-অমিল খোঁজার কী দরকার? সব কিছুতেই ধর্ম না খুঁজলে হয় না? . কথা সত্য যে, কোয়ান্টাম মেথড কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু আরও বড় সত্য হলো, ধর্ম নিয়ে কোয়ান্টাম মেথডের একটা বড় কার্যক্রম চলে। . মুসলমানদের অনেকেই অন্ধভাবে এই মেথডের সাথে জড়াচ্ছেন। এবং হারাচ্ছেন তাদের ঈমান। বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত:--- বর্তমান মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গাটাকে যদি একবাক্যে প্রকাশ করতে হয় তবে বলতে হবে বুদ্ধি ও মনস্তাত্ত্বিক সংকট। বিগত কয়েক প্রজন্মসহ বর্তমান মুসলিম প্রজন্মের মনস্তত্ত্বকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অচল করে দেওয়া হয়েছে। তাদের মুসলিম জাতিসত্তা ও দীনি ফিতরাত নষ্ট হয়ে গেছে পশ্চিমা ও অন্যান্য জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক আঘাতে। ফলে আজ রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার সর্বত্র দীনহীনতার সয়লাব। স্বাধীনতা, প্রগতি ও যুগচাহিদার নামে বর্তমান মুসলিম উম্মাহ যেই মানসিক দাসত্ব ও ধর্মহীনতার প্লাবনে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে এর সাথে বিগত ৩০০ থেকে ৩৫০ বছরের বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের গভীর সম্পর্ক আছে। | উম্মাহর মনস্তত্ত্বকে মানুষের দাসত্ব থেকে আল্লাহর দাসতে ফিরিয়ে আনার জন্য ইসলামের সােনালি ইতিহাসের পাশাপাশি বিগত ৩০০ বছরের ইতিহাসের সাথে পরিচয় করাতে হবে। তখন তারা বুঝতে পারবে, আজকের শাসনব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, পরিবারব্যবস্থা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা নয়। বরং উপনিবেশ, প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়নের মাধ্যমে তাদের উপর বিদ্যমান মতাদর্শগুলাে চাপিয়ে দিয়েছে ইউরােপ।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
t

এই লেখকের আরো বই