চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

মুহম্মদ ইবন কাসিম

    প্রথম সংস্করণের ভূমিকা The Pre-British Bengali Literature is full of stories both in prose as well as in verse relating to the heroes of Muslim History. Not so, however, the literature produced during the British period since partition the movement to enrich the Bengali language with the cultural heritage of Islam has gained considerable strength. Books are now being written in Bengali touching on the glorious episodes and the great heroes of Islamic History. Nasim Hejazi is an Urdu writer whose books have become extremely popular among the young men and women. He has a simple, forceful way of telling stories which are built round the heroes of Muslim History. It was felt that his stories would not lose their charm when translated into Bengali. The Pakistan Co-operative Book Society Ltd., is an organisation which has been established with the object of making good books available to the public at reasonable prices. It was therefare decided to make a start and get one of Nasim Heiazi's books translated into Bengali. If the present publication which is based on the life of the young conqueror of sind proves a success, other similar books will follow. We received great encourgement in the execution of the project from Mr. Fakhruddin Valika of Karachi who donated a large sum of money for this purpose. There is no doubt that certain forces are at work which are all the time pointing out our differences. After all, the most important thing is idealogical and cultural identity. Our hearts beat in unison when we hear of the exploits of Muhammad Bin Kasim. He is a hero to all of us wherever we live. We have constantly to remind ourselves that we have a common future. Small petty differences divide us, but in our basic layalty we all stand united as one. N. M. Khan Bangladesh Co-operative Book Society Ltd. সূচিপত্র প্রথম ভাগ * আবুল হাসান * লংকার রাজ দরবার * দস্যু * গংগু ও তার কাহিনী * দেবল * বন্দী * মায়ার উদ্বেগ * ভাই বোন * শত্রু ও মিত্র * শেষ আশা দ্বিতীয় ভাগ * কুতায়বার দূত * বছরা হতে দামিশক * সৈনিক ও রাজকুমার * প্রথম বিজয় * সর্ব সহায় * শুকতারা * সিন্ধুক নব সৈন্যধ্যক্ষ * রাজা দাহিরের শেষ পরাজয় * ব্রাহ্মণাবাদ থেকে অরোর * তাদের দেবতা * সুলায়মানের বন্দী * সূর্যাস্ত তখন ছিল এমন এক সময় যখন তারা ছিল নৈতিক দিক দিয়ে পৃথিবীর দরিদ্রতম জাতি। কিন্তু এক আদর্শিক বিপ্লব সেই জাতিকে ফিল্টার করে সম্পূর্ণ নতুন এক আদর্শে উজ্জীবিত করল। তারা এতটাই উঁচুতে উঠে গেল যে,পুরো পৃথিবী তাদের জয়যাত্রার খবর শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেল এবং তাদেরকেই সভ্যতা,মানবতা ও সাম্যের রক্ষক হিসেবে মন থেকে স্বীকার করে নিল। হ্যাঁ, আমি আরবদের কথাই বলছি। উপমহাদেশের মানুষ তখনো অধিকাংশ রাজ্যের অত্যাচারী রাজাদের দ্বারা উৎপীড়িত হচ্ছে। তবে তাদের নিপীড়ন ততক্ষণ পর্যন্ত আরবদের কানে পৌঁছায় নি, যতক্ষণ না দেবলের শাসনকর্তা আরব বিধবা নারী ও এতীম শিশু বহনকারী এক আরব জাহাজ এবং বসরার শাসনকর্তার উদ্দেশ্যে প্রেরিত সিন্ধুর এক প্রদেশের বন্ধুত্বকামী সরলপ্রাণ রাজার পুরষ্কার সমৃদ্ধ জাহাজকে দেবল বন্দরে না আটকায়। অনেক সংগ্রামের মধ্যদিয়ে কিছু বন্দী আরব মুক্ত হয়ে এক বন্দী আরব বালিকার চিঠি দামেস্কে খলীফার নিকট পেশ করে। আর বাকীটা মুহাম্মদ ইবনে কাসিম নামক এক সতের বছর বয়স্ক বালকের ইতিহাস এবং সম্ভবত মুসলিম জাতির এক আক্ষেপের ইতিহাসও বটে। একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে শেষ করলাম উপমহাদেশের জনপ্রিয় সাহিত্যিক নসীম হিজাযীর এক অনবদ্য রচনা “মুহম্মদ ইবনে কাসিম”। লেখকের সাহিত্যকর্মগুলোকে মূল্যায়নের জন্য সবচাইতে ভাল বাক্য হল, “তিনি ইতিহাসের প্রয়োজনে উপন্যাস সৃষ্টি করেছেন”। সুতরাং আদর্শগতভাবেই তার উপন্যাসে কোন ঐতিহাসিক সত্যের বিন্দুমাত্র বিকৃতি হয়নি। ইতিহাসের ঘটনা পরম্পরাই উপন্যাসের লক্ষ্যবস্তু। এই শক্তিশালী উপন্যাসিকের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে উদাসীন ছিলাম বলে নিজের উপরই বিরক্ত হচ্ছি। আমি এখন নিশ্চিত যে, আমার পাঠকজীবন পুরোটাই ব্যর্থ হয়নি,আমি এরকম একটা বই ও তার লেখকের সন্ধান পেয়েছি। একটা গ্রুপে আমি বইটার খোঁজ পাই। কিছুদিন আগেই গ্রুপে বইটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেখানে কমেন্টকারীদের একজন বললেন যে এই বই পড়েই ইসলাম সম্পর্কে তার ভূল ধারণার পরিবর্তন হতে শুরু করে। তাদের পোষ্ট আর মন্তব্যেই মূলত বইটার ব্যাপারে আমার আগ্রহ তৈরি হয়। তাদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। এখন আমি আমার শেকড় চিনি,আমার পূূর্বপুরুষদের কীর্তি সম্পর্কে জানি। আর আমার দায়িত্বের তাড়নাও অনুভব করি। অশ্লীলতা আর যৌন সুড়সুড়ির মাধ্যমে পাঠককে কু-প্রবৃত্তির চর্চা না শিখিয়েও যে জনপ্রিয় উপন্যাস রচনা করা যায়, তার সহজ উদাহনরণ হলেন নসীম হিজাযী। তিনি সত্যব্রতী লেখক, একইসাথে সু-সাহিত্যিক। অনুবাদের ক্ষেত্রে এক্কেবারে সরল অনুবাদের চাইতে শৈল্পিক অনুবাদ আমার বেশী ভাল লাগে। এক্ষেত্রে অনুবাদক আমাকে সন্তুষ্ট করেছেন একইসাথে সরলপ্রেমীদেরও নিরাশ করেননি। অনুবাদ যথেষ্ট শৈল্পিক হলেও অনুবাদক এর সরলতা বজায় রেখেছেন। পাঠককে হিজাযীর সুলিখিত ইতিহাসকেন্দ্রিক উপন্যাসের জগতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এরইমধ্যে অনেকেই হয়ত পড়ে ফেলেছেন। মুহাম্মদ ইবনে কাসিমের বক্তৃতাগুলো ছিল সোনার অক্ষরে বাঁধিয়ে রাখার মত। তার পরিণতি আর মুসলিম জাতির অধঃপতন একে অপরকে জড়িয়ে আছে। প্রকাশক হিজাযীর উপন্যাস সম্পর্কে লিখেছেন, “তার উপন্যাসগুলো বোনের কাছে মায়ের মৃত্যুর গল্প শোনার মত। চোখ বেয়ে আপনাআপনি পানি গড়িয়ে পড়ে”। ভাল থাকুক নসীম হিজাযী, আপাতত তার অমর কীর্তিগুলোই আমাদের আনন্দিত ও গর্বিত করার পাশাপাশি পথও দেখাক। আমরা “আঁধার রাতের মুসাফির”।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
নসীম হিজাযী
শরীফ হুসাইন(উর্দু: شریف حسین,ছদ্মনাম নসিম হিজাযী (উর্দু: نسیم حجازی হিসাবে বেশি পরিচিতি, জন্ম:১৯১৪ - মৃত্যু: ২ মার্চ ১৯৯৬) হলেন একজন পাকিস্তানি উপন্যাসিক ও লেখক, যিনি লেখালেখির সময় নসিম হিজাযী ছদ্মনাম ব্যবহার করেন। তিনি একজন উর্দু ভাষার লেখক। হিজাজী পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার ধারওয়াল শহরের পাশের একটি গ্রাম সুজানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই ১৯৪৭ সালে তার পরিবার লাহোরে বসবাস শুরু করে। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছেন এবং ১৯৯৬ সালের ২ মার্চ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।


প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাদীক্ষা
নসিম হিজাজী ১৯৩২ সালে ধারওয়াল মিশন হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৩৮ সালে লাহোর রেলওয়ে রোড ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিআই পাশ করেন। পড়াশোনা শেষে সাংবাদিকরা জগতে পা রাখেন। ১৯৪১ সালে করাচীর দুটি পত্রিকা ‘হায়াত’ এবং ‘জমানা’ এর সাথে যুক্ত ছিলেন। বেলুচিস্তান ও সিন্ধু অঞ্চলে পাকিস্তান আন্দোলনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য তিনি মীর জাফর আলী খান জামালীর সাপ্তাহিক তানজিম এর সম্পাদকের দ্বায়িত্বও পালন করেন। তিনি ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত এই পত্রিকার সাথে যুক্ত থাকেন। এরপর ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত রাওয়ালপিন্ডির দৈনিক তামির এর সম্পাদক পদে নিযুক্ত থাকেন। সে পত্রিকাটিকে নসিম হিজাজী অনন্য উচ্চতায় পৌছে দেন। ১৯৫৩ সালে নসিম হিজাজী ও চৌধুরী এনায়েতুল্লাহ মিলে দৈনিক কোহিস্তান প্রকাশ করেন। যার বেশীরভাগ গুরুত্বপূর্ণ কাজই নসিম হিজাজী পালন করেন। এই পত্রিকা গ্রহণযোগ্যতা ও সফলতার মনজিলে খুব দ্রুত পৌছে যায়। এটা লাহোর এবং মুলতান থেকেও প্রকাশ হওয়া শুরু করে। দেখতে দেখতে পাঞ্জাব থেকেও প্রকাশ হওয়া শুরু করে এবং সব পত্রিকার উপরে চলে যায়। ১৯৬৩ সালে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার এর তিনটি এডিশনের উপরেই দুই মাসের জন্য সেন্সরশীপ আরোপ করে। অজুহাত হিসেবে পত্রিকার একটি খবরকে বানায় যে, লাহোরে এহতেজাজি জলসায় পুলিশের গুলিতে তিনজন ছাত্র নিহত হয়েছে। কিন্তু সরকারের ভাষ্য হচ্ছে কেউ নিহত হয় নাই বা আহতও হয়নাই। নসিম হিজাজীকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনাটা পত্রিকার জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। এর পর এটি আর আগের অবস্থায় ফিরতে পারেনি। তাছাড়া ১৯৬৩ সালে চৌধুরী এনায়েতুল্লাহ এই পত্রিকা থেকে আলাদা হয়ে যান। যাইহোক ১৯৭১ সালে দৈনিক কোহিস্তান প্রকাশিত হওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নসিম হিজাজী তার মূল কাজ ঐতিহাসিক উপন্যাস লেখায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। এছাড়াও রাওয়ালপিণ্ডি থেকে প্রকাশিত দৈনিক জঙ্গ পত্রিকায় মাঝেমাঝে ঐতিহাসিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রবন্ধ লিখতেন।

উপন্যাসসমূহ
 তিনি তার অধিকাংশ কাজের ভিত্তি হিসেবে বেছে নিয়েছেন ইসলামী ইতিহাসকে। ইসলামের ইতিহাস নিয়ে তার এই কাজের মধ্যে তিনি ইসলামী সাম্রাজ্যের উত্থান ও পতন দুটোই দেখিয়েছেন। তার উপন্যাস মোহাম্মদ বিন কাসিম, আখেরি মা’রেকা, কায়সার ওয়া কিসরা ও কাফেলায়ে হেজাজ এর মধ্যে ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাদিক্ষায় উন্নতির যুগ বর্ণনা করেন। আবার ইউসুফ বিন তাশফিন, শাহিন, কালিসা আওর আগ এবং আন্ধেরি রাত কি মুসাফির এই বইগুলোতে স্প্যানিশদের পুনরায় বিজয়ের বর্ণনা দিয়েছেন। এগুলোর একটার(কালিসা আওর আগ) এর মধ্যে তিনি বেদনাময় তথাপি সত্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কুখ্যাত স্পানিশ ইনকুইজিশন এর ব্যাপারটা। যা শুরু হয়েছিল স্পানিশ ইহুদিদেরকে লক্ষ্য করে এবং শেষ হয়েছিল স্প্যানিশ মুসলমানদেরকে নির্বাসন বা জোরপূর্বক বাহ্যিকভাবে খৃষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করার মাধ্যমে। আখেরি চটান উপন্যাসে বর্ণনা করেছেন মধ্য এশিয়ায় চেঙ্গিস খানের বিজয় ও খারেজম সাম্রাজ্যের ধ্বংস হয়ে যাওয়া। এই বইতে দেখিয়েছেন মোঙ্গলদের নৃশংস বিজয় এবং চেঙ্গিস খানের সামরিক প্রতিভা। সুলতান জালালুদ্দিন খারেজম শাহের দৃঢ়তা এবং বাগদাদের আব্বাসি খলিফার দুর্দশা। তিনি ব্রিটিশদের ভারত জয়ের উপর দুটো ধারাবাহিক উপন্যাস লিখেছেন। সেখানে বর্ণনা করেছেন মোঘল সাম্রাজ্য অকার্যকর হয়ে যাওয়ার পর ভারতীয় জাতির পতন সম্পর্কে। মোয়াজ্জম আলী বইটা শুরু হয়েছে পলাশীর যুদ্ধের কিছুদিন পূর্বের কাহিনী দিয়ে। মূল চরিত্র মোয়াজ্জম আলী যিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দৌলার সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। উপন্যাস মূল চরিত্রকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যেতে থাকে। সে হারানো গৌরব ও স্বাধীনতা ফিরে পেতে ভারতের বিভিন্ন স্থানে যায়। তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সর্বশেষ সে সেরিঙ্গাপটমে বসতি স্থাপন করে যা উদীয়মান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছিল হায়দার আলীর উচ্চ ব্যক্তিত্ত দ্বারা। এই বইটি শেষ হয়েছে মোয়াজ্জম আলীর মৃত্যু দ্বারা। দ্বিতীয় বই “আওর তলওয়ার টুট গাই” এর মধ্যে হায়দার আলীর ছেলে টিপু সুলতান সম্পর্কে বিস্তারিত আছে। এছাড়াও তিনি পাকিস্তানের স্বাধীনতা সম্পর্কে খাক আওর খুন নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন।

মৃত্যু ও উত্তরাধীকার 
জীবনের শেষ দিকে নসীম হিজাজী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আব্দুল কাদির খানের উৎসাহে সিয়াচেন যুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের বীরত্বের উপর একটি উপন্যাস লেখছিলেন। তার আগেই কঠিন রোগ তাকে পেয়ে বসে। ২ মার্চ ১৯৯৬ সালে রাওয়ালপিণ্ডিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ইসলামাবাদ কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পুরস্কার
১৯৯২ সালে পাকিস্তান সরকার কতৃক প্রাইড অফ পারফরম্যান্স পুরস্কার প্রদান করেন সাহিত্য এ উলেখ্যযোগ্য অবদান এর জন্য।

এই লেখকের আরো বই