চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

যশোরের নীল বিদ্রোহ ও ইতিহাসের নীল অধ্যয়

    ভুমিকা থেকে নেওয়া: সভ্যতার উল্টোপিঠে আঁকা বৃটিশদের বহুমাত্রিক বর্বরতার ইতিহাস বিশ^ব্যাপী এক করুণ চিত্রভাষ। এই বর্বরতার নানা ধরন আর নতুনত্ব প্রতিটিবারই প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে বিস্মিত করেছে। প্রতিবার অভিনব সব নির্মোহ নিষ্ঠুরতার ঝাঁপিতে ঢেকে গেছে তাদের যা কিছু হিতকর অধ্যায়। বলতে গেলে ব্যক্তিগত ও বৃটিশ স্বার্থ রক্ষা ব্যতীত তাদের কোনো উদ্দেশ্যই কাজ করেনি। যদি কোথাও কোনো জনস্বার্থের তকমা লাগিয়ে কাজ করে থাকে তারা, বুঝতে হবে সেখানেও তাদের কোনো অসৎ লক্ষ রয়েছে, যা অন্যকে হীন করার মাধ্যমে নিজেদেরকে রক্ষার জন্য তারা করেছে। একই কায়দায় তারা আমাদের এই ভূখন্ডে নীল চাষের নামে যে অত্যাচার-নির্যাতন আর হত্যার ইতিহাস রচনা করেছে, তা এখনো বিশ^বাসীকে মুহূর্ত স্তব্ধ করে দেয়। হতভম্ব করে। সারা বাংলায় যে নীলচাষ ও নীল বিদ্রোহের অধ্যায় রয়েছে, ঐতিহাসিকদের মতে, তার প্রধান অংশটি ছিল তৎকালীন যশোর জেলায়। যশোর জেলার চৌগাছা অঞ্চলের নীলকরদের নির্যাতন আর অত্যাচারে এখনো পরিবেশ ভারি হয়ে আছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট রুকুনউদ্দৌলাহ যশোরের স্থানীয় বাসিন্দা। বরাবরই তার দৃষ্টি গিয়ে পড়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা, স্মারকবাহী স্থান, কাল ও সমাজ-ব্যক্তির ওপর। তিনি তার অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে যেমন সাংবাদিকতাকে একটি বিশিষ্ট মাত্রা দিয়েছেন, তেমনি তার গবেষণা ও অন্তর্দৃষ্টি থেমে নেই ইতিহাসের ধারাবাহিক যাত্রাপথের বিভিন্ন বাঁক পর্যবেক্ষণে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার লেখালেখির অন্যতম অধ্যায় যেমন মুক্তিযুদ্ধ, লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধনির্ভর একাধিক গ্রন্থ, গ্রন্থ রচনা করেছেন একাধিক অজানা অধ্যায়ের, ঠিক একইভাবে এবার তিনি দৃষ্টি ফেলেছেন যশোরের চৌগাছা অঞ্চলের নীলকরদের অত্যাচার ও কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের নীল বিদ্রোহের ওপর। তার ‘যশোরের নীল বিদ্রোহ : ইতিহাসের নীল অধ্যায়’ গ্রন্থের বিস্তৃতি ব্যাপক। এই গ্রন্থ রচনা করতে গিয়ে তিনি যশোর জেলার ইতিহাস থেকে তার পূর্বাপর অনেক ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন অসংখ্য তথ্য-প্রমাণের আলোকে। ব্যাখ্যার প্রয়োজনে তিনি সহায়তা নিয়েছেন অসংখ্য গ্রন্থের, রচনার। গ্রন্থপাঠে মনে হয়েছে, নীলকরদের অত্যাচার-হত্যা যেমন তাকে কুরে কুরে খেয়েছে, তেমনি নীলবিদ্রোহের আগুন তাকে উদ্দীপিত করেছে। নীলকররা শুধু কৃষকদের ঠকিয়েই থেমে থাকে নি। কেউ নীল চাষ করতে অস্বীকার করলে তার ঘরের সুন্দরী মেয়েটিকে নিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে ছেড়ে দিয়েছে, আর নির্যাতিতরা অপমান সইতে না পেরে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছে। আবার অগণিত কৃষককে তারা নির্বিচারে হত্যা করেছে। নীল চাষ করতে অস্বীকার করায় এক কৃষকের মাথায় মাটি লেপটে তার ভেতর নীলের চারা রোপণ করেছে এবং যতোদিন পর্যন্ত না গাছ জন্মেছে, ততোদিন পর্যন্ত ঐ মাটি তার মাথায় লেপটে রেখেছে। এরকম অত্যাচারের পাশাপাশি তাদের অত্যাচারের ধরন ছিল হাজারো রকমের, নানা অমানুষিকতার। এই ভয়াবহতা তাড়িত করেছে প্রবীণ সাংবাদিক রুকুনউদ্দৌলাহকে। গ্রন্থে এসব নির্যাতনের বর্ণনা তিনি যেমন খুব সম্পন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, তেমনি চৌগাছা অঞ্চলেই যে প্রথম নীল বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল, তার অকুণ্ঠ বর্ণনা দিয়েছেন দক্ষ মুন্সিয়ানায়। স্পষ্ট হয়েছে নীল বিদ্রোহের অপরিহার্যতা। তার বর্ণনার নির্মোহতা ইতিহাসের এই অধ্যায়কে নতুন করে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করবে, সন্দেহ নেই। পাঠকের আগ্রহ তৈরি করবে নীলচাষের উৎসান্বেষণে। এবং অনুপুঙ্খ ইতিহাস উন্মোচিত হবে নীলচাষের, নীল বিদ্রোহের। নীলচাষ বা নীল বিদ্রোহ ঘিরে অনেক গ্রন্থ থাকলেও আজকের দিনে তার এই গ্রন্থের প্রয়োজনীয়তা কতোটুকু এ প্রসঙ্গে বলা যায়, যে অঞ্চলটিকে প্রধান কেন্দ্র বলে নীলকররা মনে করতো, সেই অঞ্চলের ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে লেখক গ্রন্থটি রচনা করেছেন। যশোর অঞ্চলের উষ্ণ আবহাওয়ার কারণেই যে ঐ জায়গাটিকে তারা বেছে নিয়েছিল নীল চাষের জন্য সে বিষয়ে বইতে চমৎকার ব্যাখ্যা রয়েছে। সুতরাং এই বইটি অন্যান্য বইয়ের চেয়ে মোটেই কম গুরুত্ব বহন করে না। বরং আলাদা বিশিষ্টতায় বইটি গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ‘যশোরের নীল বিদ্রোহ : ইতিহাসের নীল অধ্যায়’ বইটি শুধু নীল বিদ্রোহ বোঝার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, গ্রন্থে অসংখ্য বিষয়ের সমাহার ঘটেছে। যা পাঠককে নতুন নতুন পথ দেখাবে। যশোর জেলা সম্পর্কে আরো বেশি আগ্রহী করে তুলবে। পাঠক তার পূর্বপুরুষের ওপর বৃটিশদের পৈশাচিকতায় আর একবার অবগাহন করে বুঝে নিবেন যে, কেমন ছিলো এই ভূখন্ডে শ্বেতমানবের কদর্য স্বভাব। (ওবায়েদ আকাশ) কবি ও সাহিত্য সম্পাদক দৈনিক সংবাদ সম্পাদক, শালুক।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
রুকুনউদ্দৌলাহ:
জন্ম -২০ মার্চ, ১৯৫৬। 
জন্মস্থান: পশ্চিমবঙ্গের বাদুড়িয়া থানা, জেলা ২৪ পরগানা।

রুকুনউদ্দৌলাহ’র শৈশব-কৈশোর কেটেছে নওগাঁয়। সেখানে থাকতেন অগ্রজ আসফউদ্দৌলা’র কাছে।
নওগাঁ কেডি স্কুলে পড়াকালীন বেজে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের দামামা।
রাজনৈতিক সচেতন রুকুনউদ্দৌলাহ পরিবারের সাথে চলে যান ভারতে।
সেখানে শিলিগুড়িতে প্রশিক্ষণ শেষে ফ্রিডমফাইটার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

নওগা সরকারি কেডি বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, সরকারী সিটি কলেজ,যশোর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং সরকারী এমএম কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রী অর্জন করেন।
ধর্ম মানবতা।
সাংবাদিকতা ছাড়া অন্য কোনো পেশায় ঢোকেননি এক মুহূর্তের জন্যেও।
দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম দৈনিক সংবাদ এর সাথে জড়িত চার দশকের বেশি সময় ধরে।
‘সংবাদ’ এ তার নিয়মিত কলাম ‘গ্রাম-গ্রামান্তরে’ বেশ জনপ্রিয়।
তিনি চ্যানেল আই, রেডিও টুডেতে কাজ করেছেন।
যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্ফুলিঙ্গ, দৈনিক ঠিকানা, দৈনিক রানার, দৈনিক কল্যাণ’এ বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।
বর্তমানে যশোর থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক যশোরের কাগজের সম্পাদক।
এ পেশায় সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন আইডিই পুরষ্কার, যশোর শিল্পী গোষ্ঠী পদক, জ্ঞানমেলা পদক 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে গ্রহণ করেন বজলুর রহমান স্মৃতিপদক।
শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে ‘গ্রাম- গ্রামান্তরে’, নবযুগ প্রকাশনী থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধে যশোর’ নবরাগ প্রকাশনী থেকে ‘আমার কৈশোর আমার মুক্তিযুদ্ধ’ ‘মানুষের ভাবনা মানুষের কথা’ এবং ‘ছোট ছোট কথা অচেনা মানুষ’ ‘জনতার গভর্নর’ ‘দেশ জনতার খণ্ডচিত্র’‘রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা’ গাঁও গেরামের কথা’ অরিত্র প্রকাশনী থেকে‘ যশোর রোড ১৯৭১’ হাতাহাতি যুদ্ধ ১৯৭১‘নামে বই প্রকাশিত হয়েছে।
একই সাথে ‘আমার কৈশোর আমার মুক্তিযুদ্ধ’ বইয়ের ইংরেজি ভার্সানও প্রকাশিত হয়েছে।

এই লেখকের আরো বই