চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

আত্মার আহার-১

    লেখকের বক্তব্য: যা তুমি কর, যা তুমি ধর, জানি সবি শুধু পেতে মোর মন/ তাইতো এত আয়োজন শত, এত সব মাতন।/ তবে নিজ বুকে রাখ কান, বন্ধ হোক বাহিরের যত ধ্যান জ্ঞান/ যদি জানতে চাও আমার যাতন।/ মহাকাশ ছেদী, মহাকাল ভেদী, একই আকাক্সক্ষা একই আকুতী/ কবে যাব ফিরে, আপনার ঘরে, যেখানে আমার উৎপত্তি।/ ------এটা আত্মার চিরন্তন আকুতি, যা অতীন্দ্রিয়। জ্ঞানের জানালা, পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে নয়, ধ্যানের উপলব্ধি দিয়ে তা বুঝতে হবে। আত্মার উপর ভর করে কাদার শরীরে মানুষের বসবাস। শরীরের পঞ্চ ইন্দ্রিয়গুলো মূলত তথ্য সংগ্রহ করে মনকে প্রদান করে। ইন্দ্রিয় কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য স্বতঃসিদ্ধ নয়। মন সে তথ্য গুলো তার আর্কাইভে সংরক্ষিত তথ্যের সাথে মিলিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। যার সব কিছুই শরীর এবং মনের শান্তির জন্য, যার স্থায়িত্ব সময়ের শেকলে বাধা। ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য তথ্যগুলো মনের বোধগম্য, নিম্ন স্তরের তরঙ্গে যার অবস্থান। সরল কথায় মানুষের ইন্দ্রিয়গুলোকে পার্থিব আকাক্সক্ষা তৈরির কারখানা বলা যায়। অন্য দিকে, আত্মার ভাষা হচ্ছে নিরবতা, অনুভব আর চেতনা, যা মনগ্রাহ্য তরঙ্গ থেকে অনেক উচ্চ তরঙ্গে অবস্থান করে। নিম্ন তরঙ্গ আত্মার এন্টিনাতে ধরা পড়ে না। এটা অনেকটা দূরগামী বিমান নিম্ন স্তরে অবস্থিত মেঘের স্তর ভেদ করে মেঘমুক্ত উচ্চস্তরে পৌঁছানোর মত। দূরপাল্লার বিমান উড্ডয়ণের সময় নিম্ন স্তরের নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়। এ পর্যায়ে আরোহীদেরকে সমস্ত কর্মতৎপরতা বন্ধ করে সিট বেল্ট বেধে নিজ নিজ সিটে বসে থাকার আহবান জানানো হয়। কারণ এ স্তরে উড়ন্ত পাখী, ড্রোন বা স্বল্প উচ্চতায় উড়তে থাকা বিমান এবং সর্বোপরি মেঘের স্তর পার হওয়ার সময় নানান ঝাঁকুনি ও কাঁপুনি অনুভূত হয়। সেগুলো সব নিম্ন স্তরের বিষয়, অনেকটা ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য স্তরের মত। বিমান যখন নিম্ন স্তর ছাড়িয়ে উপরে উঠে যায় তখন নিচের স্তরের মেঘের গর্জন, বিদ্যুতের চমক ইত্যাদির কোন প্রাসঙ্গিকতা থাকে না কারণ অত উচ্চতায় উঠা এদের ক্ষমতার বাইরে। এই উচ্চ স্তরে পৌঁছানোর পর বিমান কোন ঝাঁকুনি কাঁপুনি ছাড়া কম তেল খরচ করে বেশী গতিতে একই উচ্চতায় স্বচ্ছন্দ গতিতে স্থির ভাবে চলতে থাকে। সিট বেল্ট খুলে যাত্রীদের চলাফেরা করার অনুমতি দেয়া হয়, কেবিন ক্রুরা খাবারের ট্রলি নিয়ে আসে। নিম্ন স্তরের কোন কিছুই কোন রকমে এ স্তরে উঠে আসা বিমানকে প্রভাবিত করতে পারে না। ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য কোন কিছুই আত্মাকে স্পর্শ করতে পারে না। স্বর্গীয় সুখের অনুভবই আত্মার আহার।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
কর্ণেল মেহের মহব্বত হোসেন (অব.):
বিধাতা বোধ হয় কিছু জীবন গল্পের কাহিনীর মত মানানসই করে সাজায়, যাতে করে মর্তের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রকাহিনী কারেরা তাদের কাহিনী রচনা করার খোরাক পায়। লেখকের বয়স দুই বছরে পৌঁছানোরঅনেক আগেই তিনি তার মাকে হারান। আর তখন প্রযুক্তির অপ্রতুলতার  জন্যই হোক না কারো অমনোযোগিতার জন্যইহোকতার মায়ের কোন ছবি কেউ তখন তুলেরাখেনি। অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে তিনি তার জন্মদাত্রী মাকে দেখে নি। অবহেলা আর বঞ্চনার মধ্যেইসৎ মায়ের সংসারে বড় হন তিনি। যশোহর সেনানিবাসের সাথে লাগোয়া ছাতিয়ানতলা নামকগ্রামে জন্ম হওয়াই এবং যশোহর ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করার সুবাদেউন্নাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণকারী পাকিস্থানীদেরকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ লাভ করে তিনিছোটকাল থেকেই তাদের সহ্য করতে পারতেন না। মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়সে ছোট থাকা সত্ত্বেওদু’দুই বার ছুটে যান সীমান্ত পার হয়ে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য।
একদিকে ওই বয়সে যা কিছু পিছু টানে তেমনকিছুর  অভাব এবং অন্যদিকে পাকিস্তিনীদের প্রতিতীব্র অসন্তোষ তাকে যুদ্ধে যোগদানের জন্য অনুপ্রানিত করে। কিন্তু বয়স কম হওয়ার কারণেতাকে ক্যাম্প থেকে দুই বারই ফেরৎ দেয়া হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন তিনি শরণার্থী ক্যাম্পেঅবস্থান করে শতকোটি সবহারা মানুষের সান্নিধ্যে আসেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর পরসেনাবাহিনীতে যোগদান করে কর্ম জীবন শুরু করেন। সেনাবাহিনীতে চাকুরীকালীন দেশেবিদেশে চাকরী আর ট্রেনিং এর সুবাদে অনেক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আর প্রকৃতি ও পরিস্থিতিরসম্মুখীন হওয়ার সুযোগ পান।
জীবন তাকে নিষ্ঠূরতা, নির্মমতা, ভালবাসা, হাসি,  কান্না ভরপুর স্মৃতির এক বিশাল ভাণ্ডার দান করে।সেনাবাহীনিতে দীর্ঘ চাকুরী শেষে তিনি একটা ছকে বাঁধা জীবন থেকে বের হয়ে মুক্ত জীবনেরসাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিজ জন্মভুমিতে অর্থাৎ নিজ গ্রামে ফেরত যান। এ সময়টুকু ছিললেখকের দুটো আলাদা জীবনের সন্ধিক্ষণ। পূর্বের জীবনটা ছিলো বুলেট প্রুফ স্বচ্ছ কাচেরদেয়ালের মধ্যে থেকে বাইরের পৃথিবী দেখা আর পরেরটা কাচের বাইরে এসে ধুলো, রোগজীবাণু, হাসি কান্নায় ভরা, মুক্ত দুনিয়াতে বসবাস। জীবনের এই দুটি ভিন্ন চিত্র লেখককেজীবনের স্বরূপ অনুসন্ধানে অনুপ্রানিত করে। তাই লেখক একদিকে যেমন মানুষের অতৃপ্ত মন ওআত্মার কাহিনী তুলে ধরতে চান অন্য দিকে এই সব ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র আত্মার কাছ থেকে মহাত্মারচাওয়া পাওয়ার স্বরূপটাও উদঘাটন করতে চান।
লেখক নিয়মিত ভাবে তার
website :www.human-humanity.com I www.humanity-human.comGes facebook.com/ allhumanity তে ছোটগল্প, উপন্যাস, মোরাল স্টোরী, ইত্যাদি প্রকাশ করে থাকেন। আশাকরি জীবন থেকে নেয়াএবং জীবন থেকে শেখা গল্পগুচ্ছ ‘জীবনের খোলা পাতা’ আপনাদের ভাল লাগবে এবং সব পাঠকই কোন না কোন চরিত্রে নিজেকে খুঁজে পাবেন।

এই লেখকের আরো বই