চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

সভ্যতার আত্মবিলাপ

    বঙ্কিমচন্দ্ররা যখন বড়বড় উপন্যা সলিখতেন তখন বিদ্যাসাগর মহাশয় শিশুদের জন্য প্রথমভাগ, দ্বিতীয়ভাগ লিখতেন। কথা হচ্ছে বিদ্যাসাগরের কি উপন্যাস লেখার যোগ্যতা ছিলোনা? আসলে তিনি নতুন প্রজন্মকে গড়বার তাগিদ বেশি করে অনুভব করতেন। ভদ্র সমাজের বাহবা কুড়ানোর থেকে এই কাজটা বেশি নৈতিক দায়িত্ব বলে তিনি মনে করতেন। তেমনি বর্তমান সময়ে লেখকরা যখন পুঁজিপতি শ্রেণির বেলজিয়ামটাকে তৈলমর্দনে ব্যস্ত তখন লেখক জাহানারা মুক্ত সমাজের নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত, শোষিত, প্রবঞ্চিত মানুষের জীবনের বেদনা গাথা ইতিহাস সংকলনের চেষ্টায় ব্রতী হয়েছেন। যাদের অবাঞ্ছিত দুঃখের কথা শুনতে কথিত ভদ্র সমাজের একান্ত অনীহা। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি একের পর এক বর্তমান সময়ের সভ্য পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি এবং বিড়ম্বনার কারণ হচ্ছেন। সমাজ বিনির্মাণের হাতিয়ার শ্রমিক শ্রেণীসমগ্র পৃথিবীতে অবহেলিত শ্রেণী হিসেবে গণ্য। তার মধ্যে নারী শ্রমিকরা আরো বেশি অবহেলিত। অনেকে পুরুষের সমান শ্রমার্জন ও অর্থ বাচানোর স্বার্থে এই অবহেলিত নারী শ্রমিকদের ব্যবহার করে থাকেন। এই সকল মুখোশ ধারী, হীনমন্য পুজিপতি শ্রেণিকে তিনি শব্দালঙ্কারের চপেটাঘাতে-নাজেহাল করেছেন। সমান পরিশ্রম করেও নারীরা কেনো সমান মজুরী থেকে বঞ্চিত সেটা তার প্রতিবাদী কলমের প্রতিটি আঁচড়ে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। পৃথিবীতে সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানীদের জীবনীযদি লিপিবদ্ধ হতে পারে তবে যে শ্রমজীবীদের ঘর্মাক্ত নোনা জলে নির্মাণ হয়েছে সভ্যতার চূড়া, তাদের জীবনবৃত্তান্ত কেনো লিপিবদ্ধ হবেনা? এই মর্মস্পর্শী প্রশ্নের পাদপ্রান্তে প্রণতি জানিয়েই তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন এই অনাহুতের জীবন বিপ্লব। বইটি যেমন দর্শনসমৃদ্ধ তেমনি প্রতিবাদ ও সংগ্রামের নির্যাসে প্রাণবন্ত। বইটিতে ভাষার প্রাচুর্য এবং শৈল্পিক অলঙ্করণ এমনভাবে গ্রথিত হয়েছে যা পাঠকমনকে দোলা না দিয়ে পারবেনা। সব শেষে বলবো বইটির প্রারম্ভে লেখক সভ্যতার ইতিহাস থেকে যে দীর্ঘ ভূমিকা অবতারণা করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। -শান্তনুচক্রবর্ত্তী, কবি ও লেখক।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
জাহানারা মুক্ত
লেখক জাহানারা মুক্ত ১৯৫৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার মাছনা গ্রামের নিভৃত পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন।

পিতা- ডা. সাদেক আলী তরফদার মাতা- আমেনা বেগম এর আট সন্তানের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ।

তিনি বোধের সঞ্চার হবার শুরু থেকেই প্রগতিশীল কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে জড়িত। নিজের পছন্দে একজন বিপ্লবী কমরেড মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক’কে জীবন সঙ্গী হিসেবে নির্বাচন করেন।


বিবাহসূত্রে তিনি এখন যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার পানিছত্র গ্রামের বাসিন্দা। অন্যায়ের সাথে আপোষ তার স্বভাববিরুদ্ধ। যৌবনের ঊষালগ্ন থেকে শুরু করে বর্তমান বার্ধক্যের পাদপ্রান্তে দাঁড়িয়েও তিনি বিপ্লবকে জীবনের একমাত্র ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার মতো বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং দীপ্ত মনোবলের অভাব পরিলক্ষিত হয়নি তার কখনো। 


বিপ্লবী রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার কারণে তাকে কারাবরণ করতে হয়। শিক্ষানুরাগী জাহানারা মুক্ত এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের সাথে যুক্ত আছেন। একটি বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। এছাড়া তিনি একাধিক নারীসংগঠন পরিচালনা করেন। 

এই লেখকের আরো বই