চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

ভৈরব

    ফ্ল্যাপে লিখা কথা ‘ভৈরব’ উপন্যাসের মহাকাব্যিক লক্ষণ ফুটে ওঠে, এর প্রধান চরিত্র মুন্সি হায়দার আলি ভৈরবের অবিস্মরণীয় চরিত্রটির জন্য । দৈহিক সৌন্দর্যে ও বলিষ্ঠতায়, দেশপ্রেমের গভীরতায়, প্রেম ও ভালোবাসার অনুভূতিতে, চারিত্রিক দৃঢ়তায় , সমাজ সংস্কারের ব্রতে, গোঁড়ামির বিরুদ্ধে অবস্থানে, অপত্যস্নেহের প্রকাশে সর্বোপরি মানবপ্রেমের সহজাত প্রবৃত্তিতে ভৈরব এক বিচিত্র প্রমেথিয়ান চরিত্র । তার স্ত্রী ও একালের প্রেমিকা শিউলি বলেছেন, ভৈরব যখন আসতেন তার সঙ্গে দেখা করতে, তখন যেন ঘরে ষাটটি উজ্জ্বল আলো জ্বলে উঠত। উপন্যাসটির কাহিনীকাল প্রায় ৭৩ বছরের, সেখানে ভৈরবই অস্তিত্বমান রয়েছেন ৭১ বছর। ১৯৭১ সালটি এ উপন্যাসের কাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই কারনে যে, পাকিস্তান আর্মিরা এলাকার রাজাকার কমান্ডার খালেক ও তার ভাই মসজিদের ইমাম মালেকের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে তার কন্যা ও নাতনিকে ধর্ষণ করার পর হত্যা করে। ভৈরব ঠিক তার অব্যবহিত পরে ঘটনা সম্পূর্ণ জানতে পেরে, ইমাম মালেকের মস্তক কুঠোরের আঘাতে দ্বিখণ্ডিত করে আর বলে, ‘এই নে তোর পাকিস্তান দুই ভাগ করে দিলাম’। যিনি ইংরেজের গোলামি করবেন না বলে স্কুল থেকেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন । যিনি মুক্তিযুদ্ধে সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, সব মুক্তিযোদ্ধা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়। ব্যক্তিগত শৌর্যের কারণে যিনি বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ বাঘটি মারতে সক্ষম, তেমনি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অতি রক্ষণশীল মুসলমান সমাজের অর্গল ভেঙে তার প্রণয়িনী শিউলির সঙ্গে নানা বিস্ময়কর অভিসারে সাহসের পরিচয় দেন। তেমনি আবার সমাজের দুষ্কৃতকারী ও অিপরাধীদের দমনে তিনি তার আবাল্য সহচর খোকন ও দুলাল-যারা আবার নিজেরা সমকামী, তাদের কথা এবং সমাজের নানা যৌন বিকারের চিত্র উপন্যাসটিতে খোলাখুলিভাবে তুলে ধরেন। যেগুলোর প্রতি ভৈরবের কৌতুকপূর্ণ ও তির্যক দৃষ্টিভঙ্গি উপন্যাসটির কাহিনীর আরেকটি শক্তিশালী দিক। ভৈরবের সিদ্ধান্ত ও কর্মপদ্ধতি এবং অভিযান পরিচালনা খানিকটা মারিও পূজার গডফাদার উপন্যাসের ডন কোরিওলনি চরিত্রটির কথা মনে করিয়ে দেয়। পার্থক্যটা হলো পূজার মধ্যে কৌতূকপূর্ণ ও বক্র দৃষ্টিভঙ্গির উপস্থিতি নেই, কিন্তু কাজী শাহেদ আহমেদ কৌতুক রসে পরিপূর্ণ।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
কাজী শাহেদ আহমেদ:

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা, ক্রীড়া সংগঠক, প্রকাশক ও জেমকন গ্রুপের চেয়ারম্যান কাজী শাহেদ আহমেদের ১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোর শহরের কাজীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে তিনি নতুন ধরনের উদ্যোগ নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। পত্রিকা, ব্যবসা কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সবকিছুতেই নতুনত্বের ছোঁয়া নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি।

আজকের বাংলাদেশে প্রকাশিত পত্রিকায় যে আধুনিকতার উপস্থিতি, তার শুরুই হয়েছিল কাজী শাহেদ আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকার হাত ধরে, যা তৎকালীন মুক্তমত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।


১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরে কাজী শাহেদ আহমেদ জন্মগ্রহণ করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের পর তিনি ১৪ বছর সেনাবাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন।

১৯৭৯ সালে ‘জেমকন গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার ব্যবসায় জীবন শুরু। প্রকাশক ও সম্পাদক ‘খবরের কাগজ’ ও ‘আজকের কাগজ’। বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।

তার রয়েছে অসামান্য কিছু অলাভজনক উদ্যোগ। এসব অলাভজনক উদ্যোগের মধ্যে আছে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ও কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন।

সাহিত্য পরিমণ্ডলেও তিনি সুপরিচিত। কাজী শাহেদ আহমেদের প্রথম গ্রন্থ ‘আমার লেখা’। এটি ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয়। সে বছরই ‘ঘরে আগুন লেগেছে’ বইটিও প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালে তার ৭৩ বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস ‘ভৈরব’ প্রকাশিত হয়। আত্মজীবনী ‘জীবনের শিলালিপি’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। একই বছর প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘পাশা’।

২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘দাঁতে কাটা পেনসিল’। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘অপেক্ষা’। ইতোমধ্যে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে ‘ভৈরব’। তার আত্মজীবনীর ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।

এই লেখকের আরো বই