চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

মাধুকরী

    ফ্ল্যাপে লিখা কথা: থু ঘোষ চেয়েছিল, বড় বাঘের মতো বাঁচবে। বড় বাঘের যেমন হতে হয় না। কারও উপর নির্ভরশীল—না নারী, না সংসার, না গৃহ, না। সমাজ-সেভাবেই বাঁচবে সে, স্বরাট, স্বয়ম্ভর হয়ে । তার বন্ধু ছিল তথাকথিত সভ্য সমাজের অপাঙক্তেয়রা। পৃথু ঘোষ বিশ্বাস করত, এই পৃথিবীতে এক নতুন ধর্মের দিন সমাসন্ন। সে—ধর্মে সমান মান-মৰ্য্যদা এবং সুখ-স্বাধীনতা পাবে প্রতিটি নারী-পুরুষ। বিশ্বাস করত, এই ছোট্ট জীবনে বাঁচার মতো বাঁচতে হবে প্রতিটি মানুষকে। শুধু প্রশ্বাস নেওয়া আর নিশ্বাস ফেলা বাঁচার সমার্থক নয় । কিন্তু সত্যিই কি এভাবে বাঁচতে পারবে পৃথু ঘোষ ? সে কি জানবে না, বড় বাঘের মতো বাঁচতে পারে না কোনও নরম মানুষ ? জন্ম থেকে আমৃত্যুকাল অগণিত নারী-পুরুষ-শিশুর হৃদয়ের, শরীরের দোরে-দোরে হাত পেতে ঘুরে-ঘুরে বেঁচে থাকাই মানুষের নিয়তি ? এই পরিক্রমারই অন্য নাম মাধুকরী ? এক আলোড়ন-তোলা কাহিনীর মধ্য দিয়ে জীবনের নতুন ভায্যেরই এক অসাধারণ ভাষারূপ এ-যুগের অন্যতম জনপ্রিয় কথাকার বুদ্ধদেব গুহর এই বিশাল, বৰ্ণময়, বেগবান উপন্যাস। এ শুধু ইঞ্জিনিয়ার পৃথু ঘোষের বিচিত্র জীবনকাহিনী নয়, নয় “উওম্যানস লিব’-এর মূর্ত প্রতীক তার স্ত্রী রুষার দ্বন্দ্বময় জীবনের গল্প, এমনকি, জঙ্গলমহলের অকৃত্রিম কিছু শিকড় খুঁজেফেরা মানুষের অজানা উপাখ্যানও নয়। এ-সমস্ত কিছুর মধ্য দিয়ে। তবু এ-সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে “মাধুকরী” এই শতকের মানুষের জীবনের যাবতীয় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আগামী প্রজন্মের মানুষের সার্থকভাবে বেঁচে থাকার ঠিকানা । এই কারণেই বুঝি এ-উপন্যাস উৎসর্গ করা হয়েছে 'একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের হাতে। সাধারণ পাঠকের মন ও বুদ্ধিজীবী পাঠকের মনন—দু-তন্ত্রীতেই একসঙ্গে ঝঙ্কার তোলার উপন্যাস “মাধুকরী”। এর কাহিনী, ভাষা, স্টাইল, জীবনদর্শন, শ্ৰীলতা-অশ্লীলতার সীমারেখা-সবই নতুন । জীবনের প্রতি আসক্তি ও আসক্তির মধ্যে লুকিয়ে-থাকা বিতৃষ্ণাকে যে-চমকপ্ৰদ ভঙ্গিতে ছড়িয়ে দিয়েছেন বুদ্ধদেব গুহ, যে-নৈপুণ্যে বর্ণনায় এনেছেন সূক্ষ্মতা, যে-কুশলতায় ছোট-বড় প্রতিটি চরিত্রকে দেখিয়েছেন চিরে-চিরে, যে-দক্ষতায় দেশি-বিদেশি অজস্ৰ কবিতার ব্যবহার-সে-সবই এক ভিন্নতর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয় পাঠককে । বাংলা সাহিত্যে ব্যতিক্রমী সংযোজন ‘মধুকরী” । নতুন মুদ্রণের ভূমিকা: “মাধুকরী” পুস্তকাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় সাতাশির বইমেলাতে। দশ বছর পরে এই রয়্যাল সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে। গত দশ বছরে এই উপন্যাস বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ‘মধুকরী’ উৎসর্গ করেছিলাম “একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের”। তখন অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন এই বলে যে, “দশ বছর পরে এই উপন্যাসের অস্তিত্ব থাকবে তো ? ’ অগণ্য পাঠক-পাঠিকা। তাদের উষ্ণ হৃদয়ের ও বিনম্র শ্রদ্ধার যে-পুরস্কার দিয়েছেন তা আমার শিরোধার্য। ‘মধুকরী’ হারিয়ে যাবার মতন উপন্যাস নয়। কোনও পুরস্কারই কোনও উপন্যাসকে কালজয়ী করে না, করেন। শুধু পাঠক-পাঠিকারাই। এই সরল সত্যটিই পুরস্কারের ভারে নুযুঁজ অনেক লেখকই বোঝেন না। সেটা দুঃখের কথা। “মাধুকরী" রয়্যাল সাইজ-এ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে অক্ষর বড় হয়েছে অনেক। পড়তে সুবিধে হবে অবশ্যই। কিন্তু দামও হয়ে গেছে দুশো টাকা। এই দাম দিয়ে বই কিনবেন। কিনা তা অনেকেই ভাববেন । কিন্তু সবিনয়ে বলব, অন্যান্য অনেক জিনিসের থেকে বইয়ের দাম এখনও তুলনামূলকভাবে কম। নিজের জন্যেই কিনুন অথবা প্রিয়জনকে উপহারই দিন ‘মধুকরী’ তিনপুরুষ ধরে পড়তে পারবেন। শিক্ষিত মানুষের কাছে প্রকৃত ভাল উপন্যাসের মতন আজীবন সঙ্গী আর কিছু নেই। এ ছাড়া অপারক লেখকের আর কীই বা বলার আছে! আপনাদের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞ ।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
t

এই লেখকের আরো বই