চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

কমলাক্ষের অকাল বোধন

    পুলিশ-রাষ্ট্র রাজনৈতিক নেতা-চিনিকল কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি লড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে চোখ হারায় যে সাঁওতাল কৃষক, অদিতির গল্পে সেই কৃষকের অকাল বোধন হয়। কমলাক্ষ বাস্কে কৈশোর তার বান্ধবী শনিচরী মুর্মুর সাথে বিলে নীল শাপলা তুলতে যেত আর কমলাক্ষের চোখ নীলপদ্মের মতোই সুন্দর। তবু বান্ধবী শনিচরী যতদিনে স্ত্রী এবং সন্তানের মা হয়ে উঠেছে, পুলিশ বা মাস্তানবাহিনী তার গায়ে ধাক্কা দিতে এলে কমলাক্ষ বাস্কে পুরাণের নায়ক রামের মতোই সামনে এসে দাঁড়ায়। তার চোখ গুলিবিদ্ধ হয় যেমন রাম তাঁর চোখে তীর বিদ্ধ করে দেবী দুর্গাকে দিতে চেয়েছিলেন নীলপদ্মের অঞ্জলি। অন্যান্য গল্পগ্রন্থের মতো এ গ্রন্থেও লেখক অদিতির মনোভুবন সুদূরপ্রসারী। মৃত মানুষের টিলা মহেঞ্জোদারোর গল্প বলে এই গ্রন্থ যার পাশ দিয়ে এক সময় বয়ে যাওয়া ঘাগর-হাককর নদীও আজ মৃত। সুন্দরবনের যে বাওয়ালি নারীরা স্বামী বাদায় গিয়ে বাঘের শিকার হলে বাঘ বিধবা হয়ে যায়, তাদের করুণ আখ্যান উঠে আসে এই গল্পগ্রন্থে। আবার এই গল্পগ্রন্থ বলে ইতালীয় নারী ফ্লোরিনা পন্টির গল্প যে তার সাত মাস বয়সি গর্ভস্থ সন্তানকে ঢাকার এক কফিশপে বসে চিঠি লিখতে লিখতে সহসা গুলিবিদ্ধ হয়। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল হওয়ার স্বপ্নে বিভোলো যে মেয়েটি পরবর্তী জীবনে হয় কোনো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রজেক্ট অফিসার আর ভালোবাসার মানুষটিকে তার আর বিয়ে করা হয়ে ওঠে না, সে যেন কর্মমুখী অথচ আধুনিক আর সনাতনী মনোভাবের দ্বন্দ্বে অস্থির এসময়ের বাংলাদেশের প্রতিটি অগ্রসর নারীরই প্রতিনিধি। এই গল্পগ্রন্থ থেকে আমরা জানি সুদামা নদী পার হয়ে বহলিকা, দারাদাস, বার্বারাস, চীনাস, তুষারস সহ উদীচ্যের জনপদগুলোর কিনার থেকে কেকয়ের রাজপ্রাসাদে আসা দাসী মন্থরার কথা। এ গল্পের বইয়ে আছেন নিভৃত মফস্বলের বিজ্ঞান শিক্ষক অনন্ত সাধন স্যার, তার মেয়ে ঈশ্বরকণা ও টেলিস্কোপ ভালোবাসা এক ছাত্রের কথা। আছেন কুমিল্লার স্বদেশি আন্দোলনের দুই কিশোরী শান্তি ও সুনীতি যারা ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে গুলি করেছিল। আছে গার্মেন্টস কারখানায় পুড়ে মরা কুমারী সিন্দারেলা বাড়ই।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
t

এই লেখকের আরো বই