চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

নিষুপ্ত জাগরণ (হার্ডকভার)

    সমাজ সংস্কারক ও চিন্তক আবুল হুসেনের জন্ম যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নিভৃত পানিসারা গ্রামে। আজ থেকে ১২৮ বছর (মতান্তরে ১২৯) আগে জন্ম নেওয়া মনীষীর সমাজ ভাবনা এখনো প্রাসঙ্গিক। আবুল হুসেনের ভাবনাকে বুঝতে গেলে, উপলব্ধি করতে হলে তার রচনাসমূহ পাঠের বিকল্প নেই। সামান্য কথায় লিখলে বা অল্পকথায় তাকে বোঝাতে গেলে অনগ্রসর পাঠক অনুধাবন করতে বিব্রত হতে পারেন। তাকে বুঝতে হলে সমপর্যায়ের মেধা মননশীলতা প্রয়োজন, অথবা মেধার সংস্কার প্রয়োজন। বিগত শতকের বিশ থেকে চল্লিশ দশক পর্যন্ত প্রায় কুড়ি বছর নিরলস নিজের একক লিখন-বক্তৃতায়, পরে গোষ্ঠীগত (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম সাহিত্য সমাজ ও শিখাগোষ্ঠী) লেখন ও বক্তৃতায় বাঙালি মুসলিম সমাজকে নিজবলে বলীয়ান ও ধর্মীয় কুসংস্কার মুক্ত করতে এবং শিক্ষাসহ নারী জাগরণে যে ভাবান্দোলন করেছিলেন তার ফলস্বরূপ ১৯৪৭-এর দেশভাগ এবং ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল বলে পরবর্তীতে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। যশোরে হুসেনকে মানসিক, আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে আগলে রেখেছিলেন তার বাবাসম শিক্ষক কাজী আনোয়ারুল কাদির (শিক্ষক কাদিরকে হুসেন বাবা বলে ডাকতেন)। পরবর্তীতে কাদির সাহেব ঢাকায় ১৯২২-২৭ সাল অব্দি তার সন্তানসম আবুল হুসেন, কাজী আব্দুল ওদুদ ও কাজী মোতাহার হোসেনের মাধ্যমে বাঙালি মুসলমানের বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণের প্ল্যাটফরম ‘শিখাগোষ্ঠী’ তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। যদিও প্রচলিত ধারায় ঢাকার বাঙালি মুসলিম সাহিত্য সমাজ ও শিখাগোষ্ঠী সংগঠনের প্রাণপুরুষ কাজী আব্দুল ওদুদ ও আবুল হুসেনকে ধরা হয় তবুও বিভিন্ন তথ্যে বেরিয়ে এসেছে যে, কাজী আনোয়ারুল কাদির ছিলেন তাদের যুগের ডাকে সমাজ পরিবর্তনের পরিক্রমায় হুসেনের মেধামননে নিজের মুসলিম সমাজ পরিবর্তনের যে নেশা চেপেছিল সেখানে আরেক দিশা যোগ হয়, সেটা ইসলামের জ্ঞান-বিজ্ঞানের সোনালি যুগ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিযুক্ত হওয়ার পর ১৯২১ সালের শেষে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় সংসার আরম্ভ করেন। বাঙালি মুসলমানের জীবনমান উন্নয়ন, আপন মহিমায় প্রতিষ্ঠাকরণ, রাজনৈতিক সামর্থ্য অর্জনের উদ্দিষ্ট ভাবনায় নিজের জীবন বিলিয়ে গেছেন। ১৯৩৪ সালে তিনি ইউনাইটেড মুসলিম পার্টি নামের রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং যশোর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের সরাসরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই পার্টি গড়তে হুসেন যারপরনাই শ্রম দেন। তিনি সেই সময় গ্রামের বাড়ি পানিসারায় আগমন উপলক্ষে গাড়ি বা ট্রেনে না চড়ে কলকাতা থেকে হেঁটে ৭০-৭৫ মাইল সঙ্কুলপথ কয়েকদিনে ভ্রমণ করতেন। পথে পথে তিনি সাধারণ মানুষের জীবনমান, শিক্ষা, কৃষি সমস্যার বিষয়ে আলোচনা করতেন। এটাই তার পীড়িত হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। অন্ত্রের ক্যান্সার রোগে ১৯৩৮ সালের ১৫ অক্টোবর সকালে কলকাতায় নিজ বাসায় আবুল হুসেনের অকাল মৃত্যু হয়। আবুল হুসেনের মনোজগৎ ও দৃষ্টিনিবদ্ধ ছিল তার সময় ছাড়িয়ে আগামী দিনে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধির জন্য। তার জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ, রচনা ও প্রচারণা এখনো বাংলাদেশের সমাজকে এগিয়ে নিতে বড় প্রয়োজন। এই আবুল হুসেন নিয়ে উপন্যাস লেখেছেন কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ রেলের সাবেক মহাপরিচালক ঝিকরগাছার কৃতি সন্তান শামছুজামান ভাই। খুব দ্রুত আবুল হুসেনকে নিয়ে লেখা ‘নিষুপ্ত জাগরণ’ প্রকাশ হবে। আমি বইয়ের পাণ্ডুলিপিটি পড়েছি। আমার মনে হয়েছে এটা একটি ভাল উপন্যাস হবে। মানুষ এই উপন্যাস পড়লে ওই সময়ের সমাজ জীবন সম্পর্কে জানতে পারবে। বইয়ের প্রচ্ছদ করেছে আমাদের যশোরের মণিরামপুরের সন্তান চারু পিণ্টু।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
মোহাম্মদ শামছুজ্জামান
মোহাম্মদ শামছুজ্জামান ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২ সালে ঝিকরগাছা, যশোরের এক সাধারণ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঝিকরগাছা বাজার প্রাইমারি স্কুলে ১৯৭০ সালে প্রাইমারি শিক্ষা গ্রহণ শেষে ঝিকরগাছা বি.এম. হাইস্কুল থেকে ১৯৭৬ সালে এসএসসি এবং ঝিকরগাছা শহীদ মসিয়ূর রহমান ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৭৮ সালে এইচএসসি পাস করেন।

এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৯ সালে ভর্তি হয়ে ১৯৮৩ সালে মেকানিক্যাল ইজ্ঞিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বিসিআইসি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকুরির পর সিভিল সার্ভিসের মাধ্যমে ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যোগদান এবং ফেব্রুয়ারি-২০২১ সালে মহাপরিচালক হিসেবে অবসরে গমন করেন। পেশার বাইরে তিনি সাহিত্যিক।

নবম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় লেখালেখির হাতেখড়ি। বিগত বত্রিশ বছরে ছোটগল্প, কবিতা, নিবন্ধ, স্মৃতিকথা অনিয়মিতভাবে লিখেছেন। ইতোমধ্যে তিনটি গল্প, তিনটি কাব্য ও একটি নিবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে এক পুত্র সন্তানের জনক।

এই লেখকের আরো বই