চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

দহনকাল (প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৬)

    অদ্বৈত মল্লাবর্মণের (১৯১৪-১৯৫১) পরে দীর্ঘদিন আর কোনো জলপুত্র কলম হাতে তুলে নেননি। অদ্বৈতর মৃত্যুর ৪৯ বছর পর হরিশংকর জলদাস লিখতে শুরু করলেন। জেলেদের নিয়েই লেখালেখি শুরু করলেন তিনি। অদ্বৈত নদীলগ্ন মানুষদের জীবনকথা লিখে গেছেন, আর হরিশংকর লিখছেন সমুদ্রসংগ্রামী জেলেদের জীবনালেখ্য, তবে নদীমগ্ন মানুষজনও তাঁর কথাসহিত্যে অবহেলিত নয়। মূলত, হরিশংকর জলদাস জেলেসম্প্রদায়ের দিবারাত্রির কাব্য নির্মাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। ‘জলপুত্র’ ও ‘কৈবর্তকথা’র পর ‘দহনকাল’ লিখলেন তিনি। ‘দহনকালে’র কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে বঞ্চিত-লাঞ্ছিত জেলেসম্পদায়, আছে তাদের প্রতিবাদ-প্রতিশোধ আর আছে মুক্তিযুদ্ধ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। হরিদাস নামের একজন জলপুত্র অশিক্ষিত বাবা রাধানাথের প্রেরণায় আলোর পথে হাঁটছে। তার পরিবারকে ঘিরে সমাজের পিছুটান, স্বার্থপরদের লোলুপতা, সুবিধাবাদীদের ওপর-চালাকি আবর্তিত হচ্ছে। নিকুঞ্জ সর্দার আবদুল খালেকের সঙ্গে মিলেমিশে রাধানাথ তথা গোটা জেলেসমাজকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে। চন্দ্রকলা নামের বিধবা মহিলাটি শেষ পর্যন্ত এইসব অনাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামশীল থেকে গেছে। হরিদাস, রাধানাথ, খু-উ বুইজ্যা, রাধেশ্যাম, চন্দ্রকলা, পরিমল, রসমোহন, শিবশরণ এরা যেন জেলেসমাজের একা একটি স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর। এদের নিয়েই ‘দহনকালে’র কাহিনী বয়ন। এই উপন্যাসে দয়ালহরি বঞ্চনার শিকার হয়ে নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকে আর রামহরি নিজের জীবন দিয়ে জালাল মেম্বারের সেই বঞ্চনার প্রতিশোধ নেয়। হরবাঁশি গানের ভেতর দিয়ে জগৎ ও জীবনকে অনুধাবন করতে চায়। সমুদ্রসংগ্রামী এবং নদীলগ্ন জেলেদের সঙ্গ-নৈঃসঙ্গ্য, মৃত্যু-জীবন একাকার হয়ে আছে ‘দহনকাল’ উপন্যাসে। দহনকালের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে জেলেরা একাত্তরের পাদদেশে এসে উপস্থিত হয়। নির্জীব, নির্বীর্য, নিথর উত্তর পতেংগার জেলেপল্লীটি পাকসেনাদের অত্যাচার-বর্বরতায় জেগে ওঠে। মা-বোন-স্ত্রীর ইজ্জত রক্ষা করবার জন্য হরিদাস-রাধেশ্যাম-খু-উ বুইজ্যারা হাতে অস্ত্র তুলে নেয় নিজেদের অজান্তে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিসংগ্রামে। জেলেদের জীবনে আরেক দহনকাল শুরু হয়।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
t

এই লেখকের আরো বই