চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

রণাঙ্গনে যশোর

    লেখকের কথা: দৈনিক জনকন্ঠের বিভিন্ন রিপোর্ট করতে গিয়ে যশোরের অনেক গ্রাম ঘুরেছি। কথা বলেছি অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং সেইসব পরিবারের সাথে। বুঝেছি একাত্তরে যশোর রণাঙ্গন ছিল দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে ভিন্ন। সেই সব নিয়ে কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছি বইয়ের কাজে হাত দিই। তাই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। যশোরে পাক বাহিনীর ছিল বড় সেনানিবাস। ছিল বিমান বন্দর। আবার সীমান্ত জেলা হওয়ায় দেশের নানা প্রান্তের মানুষ যশোরের পথ ধরেই গেছে ভারতে। তাই যশোরে সবচেয়ে বেশি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সেসব নিয়ে কাজ হয়েছে কম। বধ্যভূমির সংখ্যাও যশোরে বেশি। আমি সবগুলো বধ্যভূমির নাম দেয়ার চেষ্টা করেছি। গণকবরেরও। প্রায় ১ বছর ধরে সবগুলো বৈধ্যভূমি এবং গণকবর স্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সাহায্য করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতসহ বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক সবচেয়ে বেশি এসেছে যশোর রণাঙ্গণে। আমি আমার বইতে চেষ্টা করেছি তাঁদের সেই রিপোর্ট গুলো খুঁজে বের করে আনার। কারণ তাঁদের সেই রিপোর্ট গুলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যন্য দলিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের যশোর অঞ্চলে পশ্চিম পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি(ইপিসিপি)-এর প্রভাব ছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ওই দলের কি ভূমিকা ছিল, সেটা নিয়ে অনেক সময় আলোচনা হলেও তা বিস্তারিত হয়। আমি একটি অধ্যায়ে এ নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি মনে করি ভবিষ্যতে এ বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এই বই লিখতে গিয়ে আমাকে কিছু বইয়ের সাহায্য নিতে হয়েছে। কিছু নিবন্ধও নিয়েছি। প্রতিটি অধ্যায়ে সহায়ক গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছি। কিছু ভুলক্রুটি রয়ে গেছে। বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলেছি, ৫০ বছর পর অনেকের স্মৃতি থেকে কিছু ঘটনা মুছে গেছে। ফলে একই যুদ্ধের বর্ননা ভিন্ন ভিন্ন নাম এসেছে। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি, যাঁদের নাম এসেছে, সবার নামটিই রাখতে। যেসব ভুভক্রুটি রয়ে গেছে আগামী সংস্করণে তা দূর করতে পারব বলে আশা রাখি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে যশোরের প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং সার্বিক ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। পাকিস্তানিরা প্রচারণা চালাত এই লড়াই মুক্তিযুদ্ধ নয়, ভারতীয়দের পাকিস্তান দখলের পাঁয়তারা। এটাকে বিশ^বাসীর কাছে মিথ্যা প্রমাণে যশোর এলাকা মুক্ত রাখা অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। বস্তুত যশোরের জনগণ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বসহ অন্যান্য স্বাধীনতাকামী শক্তি, সেনা, ইপিআর, পুলিশ, আনসার সবাই একাত্তরে তাঁদের সেই লক্ষ্য বজায় রাখতে মরণপণ প্রতিরোধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সে ইতিহাস দীর্ঘ, তার বর্ণনায় আসতে পারে হাজার হাজার যোদ্ধা এবং শহীদের নাম, অসংখ্য ঘটনাবলী। সব কথা স্বপ্ল পরিসরে নির্ভুলভাবে তুলে ধরা সহজসাধ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের প্রতিরোধ যুদ্ধের নিয়ামক ছিলেন জনগণ, নেতৃত্ব দেখিয়েছিল পথ। তাঁদের সবার অবদান বর্ণমালায় হয়ত কোনদিন গাথা হবে না, কিন্তু রয়ে যাবে বাংলার মানুষের হৃদয়ে। সাজেদ রহমান ৭৩, জেল রোড যশোর।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
সাজেদ রহমান:
সাজেদ রহমানের জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৫ মে শার্শার শালকোনা। পড়াশোনা গাঁয়ের সিববাস শালকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক পাকশিয়া হাই স্কুল থেকে। ডাক নাম বকুল।
পিতার নাম শহীদ সোহরাব উদ্দীন। মাতা খায়রুন নেছা। দুই ভাই ছয় বোনের মধ্যে তিনি সপ্তম। তার বড় ভাই শহীদ সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল। সাজেদ রহমান ১৯৯৮ সালে সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে অনার্সসহ মাস্টার্স পাস করেন।

দৈনিক বাংলায় ফিচার লেখালেখির মাধ্যমে তিনি সংবাদপত্র জগতে প্রবেশ করেন। ২০০০ সালের ১ আগস্ট থেকে তিনি দৈনিক জনকন্ঠে স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।
মূলত সাংবাদিকতা নয়, অন্য পেশায় থিতু হবার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু ভাই সাংবাদিক শামছুর রহমান সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হলে তিনি এই পেশায় চলে আসেন।
তিনি যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের চার বারের সভাপতি এবং (বিএফইউজে) বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের খুলনা বিভাগীয় যুগ্ন মহাসচিব ও সহ সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভ্রমণ তার শখ। বই পড়ে এবং গান শুনে সময় পার করতে তিনি পছন্দ করেন।

এই লেখকের আরো বই