অক্তাবিও পাজ
ওক্তাবিও পাজ লোজানো (৩১ মার্চ, ১৯১৪ – ১৯ এপ্রিল, ১৯৯৮) ছিলেন একজন মেক্সিকান কবি, লেখক, ও কূটনীতিবিদ। তার অসামান্য কাজের জন্য তিনি ১৯৮১ সালে মিগুয়েল ডি সার্ভেন্তেস পুরস্কার, ১৯৮২ সালে নিওয়েসড্যাট ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর লিটারেচার ও ১৯৯০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বিংশ শতাব্দীর লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের তিনি অন্যতম পুরোধা।
প্রারম্ভিক জীবন ও লেখালেখি
পাজের জন্ম হয় ওক্তাবিও পাজ সলোরজানো ও জোসেফিনা লোজানো দম্পতির ঘরে। তার বাবা তৎকালীন ডায়াজ শাসনতন্ত্রের বিরোধী বিপ্লবের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। মিক্সিকোয়াক নামক গ্রামে মা জোসেফিনা, খালা এমেলিয়া পাজ ও দাদা ইরিনিও পাজের তত্ত্বাবধানে ওক্তাবিও পাজ বেড়ে ওঠেন। তার দাদা ছিলেন একজন স্বাধীনচেৎা বুদ্ধিজীবী, ঔপন্যাসিক ও প্রকাশক। তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিচয় হল তিনি এককালে প্রেসিডেন্ট পোরফিরিও ডায়াজের সমর্থক ছিলেন। পাজের পরিবার মেক্সিকান বিপ্লবের নেতা এমিলিয়ানো জাপাতার প্রকাশ্য সমর্থক ছিলেন। জাপাতা নিহত হওয়ার পর পাজের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হয়।
ওক্তাবিও পাজ কলিগিও উইলিয়ামস নামক একটি বেসরকারী স্কুলে পড়াশোনা করেন। পাজ অল্প বয়সেই তার পিতামহের মেক্সিকান ও ইউরোপীয় সাহিত্য সমৃদ্ধ লাইব্রেরির মাধ্যমে সাহিত্য জগতের সাথে পরিচিতি লাভ করেন ।
১৯২০-এর দশকে পাজ ইউরোপীয়ান কবি জেরারদো ডিয়োগো, রোয়ান রেমন জিমেনেজ এবং এন্তোনিও মাচোদা প্রমুখের কবিতার সাথে পরিচিত লাভ করেন। পাজের প্রারম্ভিক সাহিত্যে স্প্যানিশ লেখক আন্তোনিও মাচোদার প্রভাব গভীরভাবে পরিলক্ষিত হয় [২]। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ডি এইচ লরেন্স অণুপ্রাণিত কিশোর পাজ ক্যাবেরেল্লা সহ তার প্রথম জীবনের কিছু কবিতা প্রকাশ করেন। দুই বছর পরে, ১৯ বছর বয়সে পাজ তার কবিতা সংগ্রহ লুনা সিল্ভেস্টার (বুনো চাঁদ) প্রকাশ করেন। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের পাজ নিজেকে প্রধানত কবি হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে পাজ তার আইন শিক্ষা ছেড়ে দেন। তিনি মেক্সিকোর অন্যতম প্রদেশ ইউকাতানের রাজধানী মেরিদায় চলে যান এবং সেখানে দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষকতার কাজে আত্মনিয়োগ করেন সেসময় ই তিনি তার দীর্ঘ কবিতাগুলো, যেমন বিটুইন দি স্টোন এন্ড দি ফ্লাওয়ার লিখতে শুরু করেন। বিটুইন দি স্টোন এন্ড দি ফ্লাওয়ার কবিতায় তিনি এক লোভী জোতদারের কবলে নিষ্পেষিত এক কৃষকের চিত্রকল্প এঁকেছেন শব্দে । তার এ সময়ের কবিতাগুলো টি এস এলিয়ট দ্বারা প্রভাবিত।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে মেক্সিকোতে যখন গৃহযুদ্ধ চলছিল, তখন পাজ স্পেনে অণুষ্ঠেয় দ্বিতীয় সংস্কৃতি রক্ষা আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলনে আমন্ত্রণ পান। সেই সম্মেলনে পাজ রিপাবলিকানদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন এবং ফ্যাসীবাদের বিরোধিতা করেন। স্পেন থেকে মেক্সিকোতে ফেরার পর ১৯৩৮ সালে পাজ টলার ("প্রশিক্ষণশালা") নামে একটি সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করেন। ১৯৪১ সাল পর্যন্ত তিনি এই সাময়িকীতে লিখেছিলেন। ১৯৩৮ সালেই পাজ, এলোনা গ্যারো নাম্নী এক তরুণীর সঙ্গে পরিচিত হোন এবং সে বছরই তারা বিয়ে করেন। বর্তমানে এলিনা গ্যারো মেক্সিকোর প্রথমসারির একজন লেখিকা। হেলেনা নামে তাদের একটি কন্যা সন্তান ছিল। পরবর্তিতে, ১৯৫৯ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।
১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে পাজ গাগেনহেইম নামক একটি ফেলোশিপ পান এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে তে পড়াশোনা শুরু করেন। দুই বছর পর তিনি মেক্সিকোর কূটনৈতিক সংস্থায় চাকুরি গ্রহণ করেন এবং কিছুদিনের জন্য নিউইউর্কে কর্মরত থাকেন। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে পাজ ফ্রান্সে বদলি হোন। সেখানেই তিনি রচনা করেন মেক্সিকান আত্মপরিচয় ও চিন্তা নিয়ে এল ল্যাবিরিন্তো দে লা সোলেদাদ (একাকীত্বের গোলকধাঁধা)নামক অনুসন্ধানমূলক নয়টি বৈপ্লবিক প্রবন্ধ। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে পাজ প্রথম বারের মত ভারত ভ্রমণে আসেন। একই বছর তিনি দাপ্তরিক কাজে টোকিওতে এবং পরে জেনেভায় গমন করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মেক্সিকো সিটিতে ফিরে আসেন। মেক্সিকো সিটিতেই ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার মহান কবিতা পিয়েরদা দি সল (সূর্যপাথর) রচনা করেন। একই বছর বের হয় তার কবিতা সংকলন লিবারতাদ বাজো প্যালাব্রা(মুক্তির শপথ)। ১৯৫৯ সালে দাপ্তরিক কাজে আবার প্যারিসে যান। ১৯৬২ সালে মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত হিসেবে আবার ভারতে আসেন।
ভারতে থাকাকালীন সময়ে পাজ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সমাধা করেন। এর মধ্যে এল মনো গ্রামাতিকো (বাঁদর ব্যাকরণবিদ) এবং লাদেরা এস্তে (পূর্বের ঢাল) অন্যতম। ভারতে থাকাকালে পাজ সেখানকার ক্ষুধার্ত প্রজন্ম নামক লেখকগোষ্ঠীর সাথে পরিচিত হোন এবং তাদের উপর প্রভূত প্রভাব বিস্তার করেন।
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তার ফরাসী বান্ধবী বোনার সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে। একই বছর মেরী হোসে ত্রামিনি নাম্নী আরেক ফরাসী রমনীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। জীবনের বাকী সময়টুকু পাজ মেরীর সাথেই কাটিয়েছেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ত্লাতেলোকো এর প্লাজা দি লাস ত্রেস কালতুরাস নামক চত্ত্বরে সরকারী আদেশে প্রতিবাদী ছাত্রজনতা হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে পাজ কূটনীতিবিদের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন [৫]। এরপর কিছুদিনের জন্য প্যারিসে চলে যান এবং পরের বছরই মেক্সিকো ফিরে আসেন। এ সময় পাজ কিছু স্বাধীনচেৎা মেক্সিকান লাতিন আমেরিকান লেখককে সাথে নিয়ে প্লুরাল(১৯৭০-১৯৭৫) নামক ম্যাগাজিন পত্রিকা বের করেন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পাজ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চার্লস এলিয়ট নর্টন অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনা করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যলয়ে সে সময়ে দেয়া লেকচার থেকেই জন্ম নেয় তার আরেকটি কীর্তি লস ইহোস দেল লিমো (কর্দমার শিশু)। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মেক্সিকান সরকার বন্ধ করে দেয়। সেবছরই পাজ, বুলেতা নামক আরেকটি প্রকাশনা বের করেন। বুলেতা এর ভাবাদর্শ প্লুরাল এর অনুগামী থেকে যায়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাজ এই প্রকাশনার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্যে ব্যক্তিস্বাধীনতার আবেদন উপজীব্য হবার কারণে ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে পাজ সাহিত্যে জেরুজালেম পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে পাজ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিউতস্তাদত পুরস্কার পান। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে ১৯৫৭ থেকে ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত লিখিত কবিতাগুলোর একটি সংকলন বের হয়। ১৯৯০ সালেই পাজ নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ।
ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় ক্ষুধার্ত আন্দোলনের কবিগোষ্ঠীদের ৩৫ মাসের দীর্ঘ বিচার চলাকালীন সময়ে প্রভূত সাহায্য করেন।
পাজ ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
সৃষ্টিকর্ম
ওক্তাবিও পাজ ছিলেন বহুপ্রজ লেখক ও কবি। তার সৃষ্টিকর্মগুলোর অধিকাংশই পৃথিবীর অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তার কবিতা ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন স্যামুয়েল ব্যাকেট, চার্লস টমলিসন, এলিজাবেথ বিশপ, মুরিএল রুকেসার এবং মার্ক স্ট্র্যান্ড। দিককার কবিতা মার্ক্সবাদ, পরাবাস্তবতা ও অস্বিত্ববাদী দর্শন দিয়ে প্রভাবিত ছিল। কিছুকিছু ধর্ম, যেমন হিন্দু ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের দর্শনও তার প্রথম দিককার কবিতায় প্রভাব বিস্তার করেছিল। তার লেখা "সূর্যপাথর" কবিতাটিকে পরাবাস্তবতাবাদী কবিতার একটি উল্ল্যেখযোগ্য উদাহরণ হিসেবে তার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির অনুষ্ঠানে প্রশংসিত হয়। তার পরবর্তী সময়ের কবিতার প্রধান উপজীব্য ছিল ভালবাসা ও কাম, সময়ের প্রকৃতি ও বৌদ্ধিক দর্শন। আধুনিক চিত্রকলার প্রতি পাজের অণুরাগ ছিল, যা নিয়ে তার কিছু কবিতা দেখা যায়। তিনি তার বেশকিছু কবিতা বালথুস, জ়োয়ান মাইরো, মার্সেল ডাচহ্যাম্প, এন্টোনি টাপিএস, রবার্ট রাশ্চেনবার্গ এবং রবার্টো মারিও প্রমুখের সৃষ্টিকর্মের প্রতি উৎসর্গ করেন।
একজন প্রবন্ধকার হিসেবে পাজ মেক্সিক্যান রাজনীতি ও অর্থনীতি, আজটেক শিল্প, নৃতত্ত্ববিদ্যা ও যৌনতা বিষয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ লিখেছেন। তার সুদীর্ঘ প্রবন্ধসংগ্রহ "একাকীত্বের গোলকধাঁধা" তে তিনি তার দেশের জনগনের মনের গভীরে অনুসন্ধান চালিয়েছেন এবং সেই সব মনকে একাকীত্বের মুখোশের পেছনে হারিয়া যাওয়া মন বলে বর্ণনা করেছেন। ঐতিহাসিক বাস্তবতায় হয় মেক্সিকানদের আত্মপরিচয় প্রাক কলম্বিয়ান ও স্প্যানিশ সংস্কৃতির মাঝামাঝি জায়গায় হারিয়ে গেছে, না হয় সেটা ক্ষয়িষ্ণু। "একাকীত্বের গোলকধাঁধা", মেক্সিকান সংস্কৃতি অণুধাবনের প্রধান উৎস, যা আরো কিছু মেক্সিকান লেখক যেমন কার্লোস ফুয়েন্তেসকে প্রভাবিত করেছে। ইলান স্ট্যাভান্স এর মতে পাজ হলেন - একজন আত্মপ্রতিমূর্তির জরিপকারী, একজন দান্তের ভার্জিল, একজন রেঁনেসা-পুরুষ ।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে পাজ লা ইহা দে রাপ্পাচিনো নামক একটি নাটক লিখেন। নাটকটির আংগিক গড়ে উঠেছে অধ্যাপক রাপ্পাচিনোর মনোরম বাগানের প্রতি একজন ইতালীয় ছাত্রের ঘোরাঘুরিকে কেন্দ্র করে, যেখানে ছাত্রটি গোপনে আধ্যাপকের অসাধারণ সুন্দরী কন্যা বিট্রেস এর প্রতি গোপনে লক্ষ রাখতো। একসময় ছাত্রটি বাগানের সৌন্দর্যের বিষাক্ত প্রকৃতি জেনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তার অন্যান্য সৃষ্টিকর্মগুলো হলো - এগুলিয়া ও সোল (১৯৫১), লা এস্তাসিয়োন বিওলেন্তা (১৯৫৬), পিয়েদ্রা দে সল(১৯৫৭)। ইংরেজি ভাষায় অনূদিত তার কবিতা সংকলনগুলো হলো আর্লি পোয়েমস (১৯৩৫-১৯৫৫) (১৯৭৪)এবং কালক্টেড পোয়েমস (১৯৫৭-১৯৮৭) (১৯৮৭)।
রাজনৈতিক চিন্তা
স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের সময় পাজ রিপাবলিকানদের সাথে তার সংহতি প্রকাশ করেন, কিন্তু রিপাবলিকান কর্তৃক তার এক সহযোদ্ধার খুনের ঘটনা জানার পরে রিপাবলিকানদের প্রতি তার ক্রমশ মোহভঙ্গ হয়। ১৯৫০ দশকের শুরুর দিকে ডেভিড রোসেট, আর্দ্রে ব্রীটন এবং আলবেয়ার কামু প্রমুখের চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি, বিশেষ করে জোসেফ স্তালিনের বিরুদ্ধে তার সমালোচনামুখর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হতে থাকে। প্লুরাল ও বুলেতা ম্যাগাজিনে সাম্যবাদী ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরেন। এর ফলে লাতিন আমেরিকার বামপন্থী রাজনৈতিক অংশের কাছে শত্রু বলে গণ্য হন। পাজ কমিউনিস্ট মতবাদ পরিত্যাগ করার পরে বহু মেক্সিকান বুদ্ধিজীবী তার সাথে তীব্র ও প্রকাশ্য শত্রুতা শুরু করেন। তবে, পাজ সবসময়ই নিজেকে বামপন্থী চেতনার ধারক বলেই মনে করতেন। তিনি ছিলেন গণতান্ত্রিক বামপন্থী ভাবধারক, গোড়া মতবাদধারী ও আধিপত্যবাদী ভাবধারার বাম নন। তার দি বো এন্ড লায়ার কবিতায় কবিতা ও সমাজের তথা রাজনীতির যৌথবাস ফুটে উঠেছে এভাবেই -
কবিতা ছাড়া কোন সমাজ থাকতে পারে না। কিন্তু সমাজকে কবিতা হিসেবে বোঝা যাবে না। সমাজ কাব্যিক নয়। কখনো কখনো "সমাজ" ও "কবিতা" এ দুটো পদ এক অপরকে ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা পারে না।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে বার্লিন দেয়ালের পতনের পর পাজ ও তার বুলেতা ম্যাগাজিনের সহকর্মীরা কমিউনিজমের পতনের উপর আলোচনার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবী ও লেখকদেরকে মেক্সিকো সিটিতে আমন্ত্রণ জানান। সেই সম্মেলন ২৭ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেমর পর্যন্ত মেক্সিকোর টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।