চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

না

    মফস্বলের স্কুলে পড়া সাধাসিধে এক কৈশোর। টিফিনের পয়সা থেকে এক টাকা বাচিয়ে ঘুড়ি কেনা। এরপর কোন এক রহস্যময় দুপুরে শহরের আকাশ জোড়া উড়তে থাকে সেই রাংতা ঘুড়ি। কৌতুহলি কিশোরের চোখ মুখ ছুয়ে যায় উড়ন্ত স্বপ্নরা। হাত বাড়িয়ে খপ করে ধরে ফেলা না গেলেও, স্বপ্নেরা হাতছানি দিয়েই যায় অবিরাম। ছেলেটা ভাবতে থাকে একদিন সে পাইলট হয়ে, পালকের মত উড়ে যাওয়া স্বপ্ন গুলোকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। দুপুরে দেখা স্বপ্নটা বাড়ি ফিরতেই মুরুব্বিদের কড়া শাসনে মুখ থুবড়ে পরে। বাবার আদেশে এইম ইন লাইফ রচনা লিখতে গিয়ে সাদা খাতায় গোটা গোটা অক্ষরে লেখা হতে থাকে, “বড় হয়ে আমি ডাক্তার হতে চাই…।” কিন্তু মনটা পড়ে থাকে সেই আকাশেই। পরদিন দুপুরে মায়ের চোখ এড়িয়ে বেড়িয়ে পড়া সেই কিশোর এবার ঘুড়ি উড়াবার আগে সাদা চক দিয়ে তাতে লিখে দিল, “আমি বড় হয়ে ডাক্তার না, পাইলট হতে চাই….” কিশোর বয়সটা এমনই। কত যে না বলা কথা বুকের মধ্যে জমে থাকে। জমতে জমতে পাহাড় হয়ে গেলেই ওদের কেউ সেটাকে ঘুড়ি বানিয়ে উড়িয়ে দেয়, কেউ হয়ত চুপ্চাপ গিয়ে পছন্দের গাছের কাছে গিয়ে বলে আসে, কেউ আবার এমনিই বুকে জমা করে রাখে, বছরের পর বছর। এরপর এমন হয় যে বহুদিন ধরে নিজের পছন্দের কথা গুলো,ইচ্ছের কথা গুলো চেপে যেতে যেতে, একদিন দেখা গেল ওই কিশোরটা আর স্বপ্নই দেখছে না। কলেজের গন্ডি পেড়িয়ে সে ভার্সিটিতে পড়তে গেল বাবা মায়ের পছন্দের সাবজ্ক্টে,ওর হয়ত ভালো লাগে না, কিন্তু এরপরও মুখস্ত করে দিন পার করে দিচ্ছে। একসময় পড়া শেষে পেশা হিসেবেও বেছে নিল অন্যের পছন্দের কোন পেশা। যে কাজটা সে ভালোবাসে না,সেই কাজটাই করতে করতে একদিন সে বুড়ো হয়ে গেল। অথচ কত কত স্বপ্ন ছিল তার। মুখ ফুটে খালি বলা হয়নি বলেই সেগুলো আর বাস্তবতায় ধরা দিল না। প্রীত রেজাও তার কিশোর বেলার মন খারাপ লাগা গুলো ঘুড়িতে লিখে উড়াতো। ভালো লাগার কথা গুলো বলতে না পারা সেই কিশোর ছেলেটা একদিন হঠাৎ করেই থমকে দাড়ালো আর ভাবলো “একি করছি আমি? নিজের ভালোলাগাকে বিসর্জন দিচ্ছি আমি অন্যের ভালোলাগা দিয়ে জীবন কাটানোর জন্য?” পৃথিবীর আরেক প্রান্তে একই বয়সের একটা ছেলে যদি নাসার বিজ্ঞানী হবার জন্য প্রিপারেশন নিতে পারে, সে কেন অর্থনীতি পরার পাশাপাশি আলোকচিত্রি হবার স্বপ্ন দেখতে পারবে না? কেন সবার নিষেধাজ্ঞাই তার জীবনের চলার মন্ত্র হবে।প্রীত রেজা ঘুরে দাড়িয়ে ছিল। “না” বোধক সমাজের বেড়াজালকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে প্রীত এবার আকশময় ভাসিয়ে দিল নিজের স্বপ্নের ভেলা। প্রীত সহসাই আবিষ্কার করল চারিদিকে উচ্চারিত শত শত “না” ই যেন ওর স্বপ্নযাত্রায় ফুয়েল সঞ্চার করছে।যে কাজে যত বেশি “না” সে কাজটা করার ইচ্ছেটা যেন ততই তীব্র। কিন্তু এই আনন্দলোকের যাত্রা প্রীত স্বার্থপরের মত একা করতে চায় না।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
t

এই লেখকের আরো বই