চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

কোভিড-১৯ : কে আপন কে পর

    শুরুর কথা আমি পেশাদার বই লেখক না। পেশায় সাংবাদিক। দীর্ঘ ২৬ বছর এ পেশায় আছি। ১৯৯৬ সালে সাংবাদিকতা শুরু করি। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পত্রিকায় চাকরি করেছি। প্রথমে কাজ শুরু করি যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূরবী পত্রিকায়। লেটার প্রেসে ছাপা হতো এই পত্রিকাটি। দৈনিক পূরবীতে কাজ করা কালীন অফসেট প্রেসে ছাপা শুরু হয় সাপ্তাহিক গ্রামের কাগজ। দৈনিক পূরবীর পাশাপাশি আমি সাপ্তাহিক গ্রামের কাগজে কাজ করা শুরু করি। এক পর্যায়ে পূরবী ছেড়ে দিয়ে গ্রামের কাগজে যোগ দিই। গ্রামের কাগজে চাকরি করি একটানা ২০০১ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ সময় অভ্যন্তরীণ পলিটিক্সের শিকার হই। বাধ্য হই গ্রামের কাগজ ছাড়তে। ২০০২ সালের পহেলা জানুয়ারি যোগদান করি ওইসময় যশোরের প্রভাবশালী পত্রিকা দৈনিক রানারে। কয়েক বছর কাজ করার পর রানার অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। একইসাথে শুরু হয় অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। সহকর্মীদের একটি অংশ সম্পাদক শ্রদ্ধেয় জনাব মঞ্জুরুল আলম টুটুলকে বোঝায় যে, তারা বিনা বেতনে চাকরি করবেন। বেতন দিয়ে কারো রাখা লাগবে না। সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম তাদের ফাঁদে পা দেন। তৎকালীন বার্তা সম্পাদক আহসান কবীর ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। তিনি বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে রাজি ছিলেন না। তিনি রানার কর্তৃপক্ষকে বলেন, যদি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয় তাহলে বাকিতে আমরা কাজ করবো। সংকট কেটে গেলে বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। কিš‘ কর্তৃপক্ষ সেটি মানেনি। এ কারণে বার্তা সম্পাদক আহসান কবীরের নেতৃত্বে আমরা সাতজন দৈনিক রানার ছাড়তে বাধ্য হই। রানার ছাড়ার পর বেকার হয়ে পড়ি। ওই সময় দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক শ্রদ্ধেয় একরাম-উদ-দ্দৌলা তার পত্রিকায় বসতে বলেন। বিনা বেতনে তার পত্রিকা দৈনিক কল্যাণে ছয়মাসের মতো কাজ করি। এরমধ্যে খুলনা থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকায় আমার চাকরি হয়। পূর্বাঞ্চল সম্পাদক প্রয়াত শ্রদ্ধেয় লিয়াকত আলী সুদূর আমেরিকায় বসে আমাকে ফোন দিয়ে চাকরি করার অফার করেন। আমি স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দিই দৈনিক পূর্বাঞ্চলে। কিছুদিনের মধ্যে সম্পাদক মহোদয় আমাকে যশোর অফিসের ইনচার্জ করেন। আমি একটানা ১১ বছর দৈনিক পূর্বাঞ্চলে কর্মরত ছিলাম। এরপর আবার গ্রামের কাগজে ফিরি। বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন কাজ করার সময় পেশাগত অনেক ঘাটতি দেখেছি। দেখেছি মফস্বলের সাংবাদিকদের শেখার জন্যে তেমন কোনো পুস্তক নেই। এ কারণে আগ্রহ থাকার পরও অনেক সাংবাদিক শিখতে পারেন না। বিশেষ করে গণমাধ্যমে একেবারেই নবীন; তাদের জন্যে সুচারু রূপে সাংবাদিকতা করা কঠিন হয়ে পড়ে। পেশার প্রয়োজনে সাংবাদিকতা নিয়ে একটি বই লেখার প্রয়োজন বোধ করি। বিশেষ করে সাংবাদিকতায় নবীনদের জন্যে বই লেখা খুবই জরুরি মনে হয়। এ কারণে ২০১৩ সালের ২০ এপ্রিল ‘সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ’ নামে একটি বই লিখি। বইটি বাজারে আসার পর সাংবাদিকতায় সদ্য প্রবেশ করেছেন এবং আসতে আগ্রহী এমন অনেকে সংগ্রহ করেন। যা তাদের কমবেশি কাজে লেগেছে বলে তারা জানান। ‘কোভিড-১৯ : কে আপন কে পর’ আমার দ্বিতীয় বই। কোভিড-১৯ (করোনা) শারীরিক, আর্থিক ও মানসিকভাবে কতটা ভয়াবহ সেটি যারা আক্রান্ত হননি তাদের জানানো প্রয়োজন মনে করেছি। করোনা মানুষকে যে রকম শারীরিকভাবে ধ্বংস করে দি”েছ; ঠিক তেমনি আর্থিকভাবে পঙ্গু করে দি”েছ হাজার হাজার মানুষকে। একইসাথে মানসিকভাবে দুঃসহ করে তুলছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আপনজন আর আপন থাকছেনা। অপরদিকে,অনেক অজানা, অচেনা মানুষ আপনজনের চেয়ে অধিক আপন হয়ে যা”েছ কর্মের মাধ্যমে। আমি নিজে আক্রান্ত হয়ে এমনই দেখেছি। অনেক ঘনিষ্ট বন্ধু যারা ‘তোকে ছাড়া বাঁচি না, বাঁচি না’ বলে ফেনা তুলে ফেলতো, যারা ‘আপনি অনেক ভালো মানুষ, কাজের মানুষ। আপনাকে সমাজে অনেক প্রয়োজন’ বলে মোসাহেবি করে কাজ আদায় করে নিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের অনেকেই একটিবারের জন্যে ফোন করেননি। এমনকি ধরেননিও! অথচ বছরে যাদের সাথে মাত্র দুই একবার কথা হয়েছে এমন অনেকেই নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন সর্বশেষ পাঁচ-সাত বছর আগে কথা হয়েছে এমন কেউ কেউও। তাদের কেউ কেউ সরাসরি খবর নিয়েছেন হাসপাতালের রেডজোনে এসে। এটি কেবল আমার ক্ষেত্রে না। অধিকাংশ করোনা রোগীর ক্ষেত্রে এমনই বাস্তবতা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাস্তবতা আরও করুন। এই বাস্তবতায় বইটি লিখলাম। একইসাথে বইটির নাম ‘কোভিড-১৯ : কে আপন কে পর’ দেওয়া যুক্তিযুক্ত মনে করলাম। আশা করি বইটি পড়ে করোনা আক্রান্ত মানুষের অনেক বাস্তবতা, হাসপাতালের সেবার ধরন, ডাক্তার-নার্সদের ব্যবহার, আত্মীয় স্বজনদের আচরণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। যা জেনে কিছুটা হলেও বিস্মিত হবেন। অবাক হবেন হাসপাতালের অনেক অজানা খবর জেনে। পরিপূর্ণ সু¯’ হওয়ার আগেই বইটি লেখা শুরু করি। এ কারণে কমবেশি ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে। পড়ার পর অনুগ্রহ করে জানালে পরবর্তীতে সংশোধনের চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। বইটিতে বাস্তব অনেক কিছু লেখা হয়েছে। এটি স্রেফ স্মৃতিচারণ। কাউকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে না। এই লেখা যদি সত্যি সত্যি কারো কোনো আচরণের সাথে মিলে যায় তাহলে নিজেকে সংশোধন করে নিবেন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কারণ পরিচিত মানুষ একজন আরেকজনের কাছে অর্থ সম্পদ চায় না। চায় সহমর্মিতা। তাও যখন দুঃসময়ে পড়ে। আর তখন যদি পরিচিত কেউ পিছটান দেয় তাহলে সেই কষ্ট সহ্য করা কঠিন। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে এই উপলব্ধি হোক। পরিশেষে সকলের জন্যে শুভকামনা করছি। এম.আইউব ২০.০৫.২০২১ রাত : ৯.৩১ মি.
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
এম. আইউব:
এম. আইউব। যশোর সরকারি এমএম কলেজে লেখপড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু করেন।
নেশার বশে যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূরবী পত্রিকায় তার হাতেখড়ি। পরে সাংবাদিকতাকে স্থায়ী পেশা হিসেবে নেন।
যোগদান করেন সাপ্তাহিক গ্রামের কাগজে (বর্তমানে দৈনিক)। তিনি দৈনিক গ্রামের কাগজে সাব-এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালে যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক রানার পত্রিকায় যোগদান করেন। ২০০৫ সালে যোগদান করেন খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার যশোর আঞ্চলিক অফিসে।
আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলে কাজ করেন। ২০১৬ সালে পুনরায় দৈনিক গ্রামের কাগজে যোগদান করেন।
বর্তমানে তিনি গ্রামের কাগজের চিফ রিপোর্টার পদে কর্মরত।
একইসাথে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খবরপত্র ও ইংরেজি দৈনিক মুসলিম টাইমসের যশোর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 
এম.আইউব সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের একাধারে দপ্তর সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
তার পিতার নাম আব্দুল করিম সানা। মাতা সাবিনা ইয়াসমিন।
জন্ম খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার সাতহালিয়া গ্রামে।
তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
এর আগে তার রচিত ‘সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়।

এই লেখকের আরো বই