চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

জগৎগুরু শুভদ নেতা মুহাম্মদ (সা)

Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
.

মার্টিন লিংগস
মার্টিন লিংগস (ইংরেজি: Martin Lings) (জানুয়ারী ২৪, ১৯০৯ - মে ১২, ২০০৫) যার ইসলামিক নাম আবু বক্কর সিরাজুদ্দিন, তিনি একজন পশ্চিমা লেখক, শিক্ষাবিদ ও ফ্রিটজফ শুয়ানের (ইংরেজি: Frithjof Schuon)[১] শিষ্য ও শেক্সপিয়র বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোহাম্মদ: হিজ লাইফ বেইসড অন দ্যা আর্লিয়ার সোর্স (ইংরেজি: Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources) নামের একটি ব্যাপক জনপ্রীয় ও বহুল পঠিত জীবনী লেখক হিসাবেই সমধিক পরিচিত। যদিও বইটি ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল কিন্তু তা আজও ছাপানোর কাজ চলছে।

ইতিকথা
লিংগস ম্যানচেষ্টারের বুরনেইজ নামক স্থানে ১৯০৯ সালে একটি প্রোটেষ্ট্যান্ট পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। জীবনের প্রারম্ভেই তরুণ লিংগস দেশ ভ্রমনে অভ্যাস আপ্ত করেন, তার বাবার কর্ম সূত্রে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য সময় অতিবাহিত করেন। লিংগস ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন পর্যন্ত যথাক্রমে ক্লিফটন কলেজ, ম্যাগডালেন কলেজ এবং অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করেন।

ম্যাগডালেনে তিনি সি. এস. লুইসের ছাত্র হলেও পরে ঘনিষ্ট বন্ধুতে পরিণত হন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর লিংগস চলেযান লিখুয়্যানিয়ার ভিয়্যাউতাস ম্যাগনাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি প্রাচীন ইংরেজি ভাষা- এ্যাংলো এবং আধুনিক ও পুরাতনের মধ্যবর্তী ইংরেজি ভাষার রুপ মিড্যাল ইংলিশ (ইংরেজি: Middle English) অধ্যায়ন করেন।

অক্সফোর্ডে অধ্যয়নকালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ফরসী দার্শনিক রেনে গেনো, এবং জার্মান বংশদ্ভূত ছুফিতাত্ত্বিক দীক্ষাদাতা/ তরীকার খলিফা ও দার্শনিক ফ্রিটজফ শুয়ানের প্রবন্ধ সমূহে আকৃষ্ট হওয়া ছিল স্বয়ং লিংগসের দৃষ্টিতেই অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। লিংগস ১৯৩৮ সালে ব্যাসলেতে স্যাচুনের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। এ সাক্ষাতে তিনি ইসলাম ও আহমেদ আল আলাউয়্যির প্রতিষ্ঠিত আলাউয়্যিা তরীকার (Alawiyya tariqa) স্যাচুন কর্তৃক পরিচালিত শাখার সাথে একীভূত হয়ে যান। লিংগস তৎপরবর্তীতে শুয়ানের শিষ্যত্ববরণ ও অনুসারী হিসাবে তার জীবনের নানা বিষয়াদী প্রকাশ-প্রচারে জীবনাতিবাহিত করেন।

লিংগস ১৯৩৯ সালে মিশরের কায়রোতে তার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে যান, যিনি ছিলেন রেনে গেনো সহকারী। কায়রোতে পৌছার কিছুদিনের মধ্যেই তার বন্ধুটি মৃত্যু বরণ করেন এবং তিনি সেখানেই আরবী ভাষা শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। কায়রোতে এক যুগের অধিক সময় বসবাস কালে তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষার শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন এবং শেকসপিয়ার বিরচিত নাটকের বাৎসরিক পরিবেশনার আয়োজন করতে থাকেন। ১৯৪০ সালে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । লিংগস ১৯৪৪ সালে ল্যাসলি স্মাল্লির সাথে বিবাহ বন্ধনে অাবদ্ধ হয়ে পিরামিড সমূহের নিকটবর্তী অঞ্চলে বসবাস করতে থাকেন। মিশরে স্থায়ি বসবাসের সিদ্ধান্ত নেয়া সত্ত্বেও লিংগসকে ১৯৫২ সালে ব্রিটিশ বিরোধী গোলযোগের সময় মিশর ছাড়তে বাধ্যকরা হয়। 

অবদান
যুক্তরাজ্যে ফেরার সাথে সাথেই স্কুল অব আরিজিনাল আফ্রিকান ষ্ট্যাডিজ (ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন) হতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের জন্য তিনি তার পড়াশোনা চলিয়ে যেতে থাকেন। ‍সম্মানোত্তর গবেষণায় আফ্রিকান সুফি আহমেদ আল আলাউয়্যির বিষয়ে করা তার ডক্টরাল থিসিসটি ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়।

তিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জনের পর ব্রিটিশ মিউজিয়ামে কাজ নেন এবং তৎপরবর্তীতে প্রথমে পাণ্ডুলিপি এবং অন্যান্য পাঠসংক্রান্ত কাজ তত্ত্বাবধান এর পরে প্রচ্যর ছাপা বই ও পাণ্ডুলিপি সংরক্ষক হিসাবে ১৯৭০-১৯৭৩ এ পদোন্নতি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি নানাবিধ ধর্মীয় বিষায়াদী নিয়ে নিয়মিত গণমাধ্যমে লেখালেখি করতেন। এ লেখালেখি লিংগসের জীবনের শেষ এক তৃতীয়াংশে ব্যাপকতা লাভ করে। যদিও আহমেদ আল আলাউয়্যির বিষয়ে করা তার গবেষণাপত্রটি বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছিল তথাপি ১৯৮৩ সালে লিখিত মোহাম্মদ এর জীবনী: প্রারম্ভিক যুগের তথ্যের ভিত্তিতে তার জীবন এ বইটির জন্য পাকিস্তান এবং মিশর সরকার থেকে পুরস্কার লাভের পাশাপাশি সমগ্র মুসলিম বিশ্ব তার ভূয়সী প্রশংসা করেছে। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সীরাত সম্মেলনে তার এ গ্রন্থটি ইংরেজিতে লিখিত নবীর শ্রেষ্ঠ জীবনী হিসাবে বিশেষ মর্যাদায় প্রশংসিত হয়েছে।। যদিও ক্যান্টে স্থায়ি নিবাস তৈরী করেছিলেন তবে তিনি বিশ্বময় ব্যাপক ভ্রমণ করেন। ২০০৫ সালে তার মৃত্যু হয়।

সুফিবাদের উপর তত্ত্বজ্ঞানের পাশাপাশি শেক্সপিয়ার তত্ত্বে তার ছিল বিশেষ পাণ্ডিত্য। শেক্সপিয়ার সংক্রান্ত তার প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণায় শেক্সপীয়ারের লেখনির ভিত্তিতে এর গভীর গূঢ় অর্থের বিশ্লেষণ ও শেক্সপিয়ারের আত্মজ আধ্যাত্মিকতার বিষয়টি শুরুত্বের সহিত প্রচার লাভ করে। অতিসম্প্রতি তার একটি বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস মৃত্যুর কিয়দকাল পূর্বে এ বিষয়ে দেয়া একটি সাক্ষৎকার তার মৃত্যুর পর শেক্সপিয়ার্স স্পীরিচ্যুয়ালিটি: এ পারস্পেকটিভ, এ্যান ইন্টারভিউ উইথ মার্টিন লিংগস নামে চলচিত্রের রুপ লাভ করে।

এই লেখকের আরো বই