চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

    শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থটি রচনার অনুপ্রেরণা এসেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার ছাত্র ও শিক্ষকরূপে অর্ধ শতাব্দীকালেরও বেশি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক থেকে। রমনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমার বাল্যজীবন অতিবাহিত হয়েছে ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের অন্তত পাঁচ বছর আগে থেকে। স্কুল ও কলেজের যখন ছাত্র ছিলাম তখন থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি দেখে ও জেনে এসেছি, ১৯৫১ সাল থেকে আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলন খুব কাছ থেকে দেখেছি আর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে । ১৯৫৭ সালের শেষদিক থেকে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের গবেষণা স্কলার ও খণ্ডকালীন শিক্ষক। ১৯৬১ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধান ও নজরুল অধ্যাপক পদে কাজ করেছি। ১৯৯৯ সাল থেকে আমি বাংলা বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত শিক্ষক তদুপরি আমি ভাষাতত্ত্ব ও সংগীত বিভাগের খণ্ডকালীন ও অনারারি শিক্ষক । সুতরাং এই দীর্ঘ সময় নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক অভিযাত্রার দৃশ্য আমি দেখেছি। বিশ শতকের ষাটের দশকে পরপর তিনবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সম্পাদক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাবলির সঙ্গে আমি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলাম। ১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চ নীলক্ষেত আবাসিক এলাকায় থেকে পাকিস্তান বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ থেকে শুধু নয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনীর বন্দিশিবিরে কিছুকাল আটক থেকেও আমি দৈবক্রমে বেঁচে যাই।স্বাধীনতার পর টানা প্রায় পঁচিশ বছর শহীদ মিনার আবাসিক এলাকায় থেকে শহীদ মিনারের অসংখ্য ঘটনা আমি দেখেছি। স্বাধীনতার পর কয়েক বছর ‘ডাকসু’র ট্রেজারার হিসেবেও অনেক নাটকীয় ঘটনা দেখার সুযোগ আমার হয়েছে । সুতরাং আমি হয়তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ব্যক্তিগত স্মৃতিকথা লিখতে পারতাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাস রচনার চেষ্টাও হয়তো করতে পারতাম কিন্তু ওই দুটি পথের কোনোটিতেই না গিয়ে আমি একরকম ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরের কিছু কথা লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। শুধু আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বা স্মৃতির ওপর নির্ভর করে নয়, অন্যান্য গ্রন্থ থেকেও সাহায্য নিয়েছি। কারণ স্মৃতি অনেক সময় মানুষকে বিভ্রান্ত করে। শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থ রচনায় যা বেরিয়ে এসেছে তাতে হয়তো প্রাধান্য পেয়েছে কী প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এই মহান বিদ্যাপীঠ বিশ শতকের আটটি দশক এবং একুশ শতকের দুটি দশক পেরিয়ে শতবর্ষে পৌঁছে যাচ্ছে ।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
রফিকুল ইসলাম (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৩৪) একজন বাংলাদেশি লেখক এবং দেশের প্রথম নজরুল গবেষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নজরুল-গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে পুরুস্কৃত করে। ২০০৩ সালে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর’ বই লিখে লেখক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান।

এই লেখকের আরো বই