চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

নূরজাহান - অখণ্ড

    বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন -এর সুদীর্ঘ উপন্যাস ‘নূরজাহান’ যে-গ্রামবাংলার বাস্তব চিত্র ধারণ করে আছে, সেই গ্রাম নির্মীয়মাণ এক পাকা সড়কের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে প্রতিদিন। শহরের হাওয়া লেগে গেছে যেন গ্রামে। মানুষের মধ্যে উত্তেজনা। তবু এখনও ঢােলকলমির গাঢ় সবুজ পাতায় বসছে লাল ফড়িং, কাইত্তানি অর্থাৎ কার্তিকের বৃষ্টিতে ডাগর হচ্ছে বাকসা ঘাস, চালতা পাতার ফাক দিয়ে ঝরে পড়ছে অদ্ভুত উষ্ণ রােদ। এসবের মধ্যেই বড় হচ্ছে পল্লিবালিকা নূরজাহান। শিশুর মতাে সরল হাসি লেগে থাকে তার মুখে। শীতের খেজুর গাছের অপেক্ষায় বসে থাকে দবির গাছি। আর ভাবে, বড় চঞ্চল তার মেয়েটি বিয়ের পর কোন সংসারে গিয়ে খাঁচার পাখিটি হয়ে যাবে। নুরজাহানের বড়-হয়ে-ওঠা, বিয়ে, দুর্ভাগ্য, ভণ্ড ফতােয়াবাজের হাতে অপমানিত হওয়া এবং শেষমেশ আত্মহত্যার করুণ কাহিনির পাশে লেখক এক গ্রামীণ জনপদের মানুষের নিখুঁত জীবনচিত্র এঁকেছেন। যে জীবন দোয়েলের শালিখের, সে-জীবনের অনাবিল প্রবাহকে পঙ্কিল করে তােলে কারা? অসামান্য ‘নূরজাহান’ উপন্যাসে নির্যাতিতা মেয়েটির আত্মহত্যা প্রতিটি হৃদয়ে যে-আগুন জ্বালে, সমাজের শুদ্ধিকরণে সে-আগুন চিরজাগরূক।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
১৯৫৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের জন্ম। লেখনীশক্তির পাশাপাশি তার রয়েছে নাট্যরচনায় পারদর্শিতা। বর্তমানে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদপত্র ‘কালের কন্ঠ’-এর সম্পাদক পদেও নিয়োজিত রয়েছেন তিনি। শিশুতোষ গল্প দিয়ে সাহিত্য অঙ্গনে এ গুণী লেখকের প্রবেশ, যা প্রকাশিত হয়েছিলো ‘কিশোর বাংলা’ নামক এক পত্রিকায়। তবে পাঠকের নজরে পড়েছিলেন ‘সজনী’ নামের ছোট গল্প লিখে। খুব অল্প বয়সে তিনি লেখালেখিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। ফলে তার লেখার বিষয়বস্তুতে কোনো জটিল সমীকরণের দেখা মিলতো না, পাঠককে বিমল আনন্দ দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রথমদিকে তিনি ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ বিষয়গুলোকে পরিহার করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে ইমদাদুল হক মিলন এর বই সমূহ-তে মুক্তিযুদ্ধ, হাজাম সম্প্রদায়ের জীবন, প্রবাসী শ্রমিকদের দুঃখগাথা, পাটচাষী, গ্রাম বাংলার সমাজের এক নিখুঁত চিত্রও ফুটে উঠতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে লেখকের বক্তব্য, তিনি নিজেই লেখার এরকম বিপরীতধর্মী দুটি ধরন আপন করে নিয়েছেন, আর এক্ষেত্রে তার অণুপ্রেরণা ছিলেন সমরেশ বসু। ইমদাদুল হক মিলন এর বই সমগ্র-তে স্থান পেয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক নাটক এবং প্রায় দু’শো উপন্যাস। শিশুতোষ গল্প এবং ভৌতিক উপন্যাস রচনাতেও তার জুড়ি নেই। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ সৃষ্টিশীলতার কারণে বাংলা উপন্যাস ইমদাদুল হক মিলন এর কাছে কৃতজ্ঞ। শুধু বাংলাদেশ না, পশ্চিমবঙ্গেও তার সমান জনপ্রিয়তা রয়েছে। দুই বাংলায় আলোড়ন সৃষ্টিকারী তার বহুল পঠিত উপন্যাস হলো ‘নূরজাহান’। এছাড়াও ইমদাদুল হক মিলন এর উপন্যাস সমগ্র বিভিন্ন পাঠকপ্রিয় উপন্যাসে ঠাসা। তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো ‘জিন্দাবাহার’, ‘নিঝুম নিশিরাতে’, ‘যাবজ্জীবন’, ‘কালাকাল’, ‘কালো ঘোড়া’, ‘ভূমিপুত্র’, ‘পরাধীনতা’, ‘কে’, ‘তাহারা’, ‘ভূতের নাম রমাকান্ত কামার’ ইত্যাদি। দেশি-বিদেশি নানা সম্মানজনক পুরস্কারের পাশাপাশি ২০১৯ সালে তিনি একুশে পদক পান।

এই লেখকের আরো বই