চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

এডগার অ্যালান পো-র শ্রেষ্ঠ রহস্য-রোমাঞ্চ

    ফ্ল্যাপে লিখা কথা: কোনো লেখকের কোন লেখাগুলো সেরা, এ নিয়ে মতভেদ থাকতেই পারে, বিশেষ করে সে-লেখক যদি হন এডগার অ্যালান পো-র (১৮০৯–১৮৪৯) মতো কেউ ; পো-র লেখার ধরনই এ-রকম যে কোনো পাঠক হয়তো বলবেন তার সব লেখাকেই কেন সেরা জাতের বলা হচ্ছে না। বিশেষত কবিতা, গল্প, প্ৰবন্ধ-পো নানারকম লিখেছেন। সত্যি, তবু হয়তো তার সব লেখাকেই একসঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে পড়া উচিত। আধুনিক কালে কবিতা কেমন হবে তার ইশতেহার লিখতে গিয়ে পো যখন বলেন, দীর্ঘ কবিতা এ-যুগে অচল-কেননা অতিক্ষণ ধীরে কবিতার ভেতরকার আততি, অধিজ্যতা বা টানটান উত্তেজনা বজায় রাখতে পারবেই বা কে-আর, পো বলেন, ঐ ভেতরকার ‘টেনশন’ বাদ দিলে আর যা-ই হাকে, কবিতা নিশ্চয়ই হয় না, তখন তিনি ছোটোগল্পেরও মূল সূত্র জানিয়ে দেন। শুধু কবিতা কেন, তাই পো-র গল্প পড়ে মনে হয়, ছোটোগল্পও ঐ আততিকেই চায়, তার এমন একটা ছিলটান ‘টেনশন’ যা ছোটোগল্পকেও নিয়ে যায়। ‘আধুনিক’ কবিতারই কাছাকাছি। হয়তো সেইজন্যেই পো তীর একমাত্র উপন্যাস ন্যারেটিভ অভ আৰ্থার পর্ডন পিম লিখতে শুরু করেও শেষ করে যাননি (হয়তো শেষ করে যাবার মতো সময় সুযোগ বা অবসর পাননি)-সেটা অনেক পরে শেষ করেছিলেন তার একজন ভক্ত লেখক-ফ্রানসের জুল ভের্ন-বিজ্ঞাননির্ভর রোমাঞ্চিকা লেখার জন্যে যে জুল ভের্ন সম্ভবত আজও সর্বাগ্রগণ্য। পো-র ছোটোগল্প ‘আপাতদৃষ্টিতে’ নানা ধরনের। তিনিই হয়তো আধুনিক অর্থে রহস্যকাহিনী বা গোয়েন্দাগল্পের স্রষ্টা-অন্তত এই বইয়ের “রুদ্ধ মৰ্গের হত্যারহস্য”, “চোরাই চিঠি” বা ‘সোনাপোকা৷” পড়ে পাঠক দেখতে পাবেন আর্থর কনান ডয়েল কাকে ‘মডেল’ হিশেবে গ্রহণ করেছিলেন। ভয় যদি কোনো গ্ৰীম হয়—তবে সেটা যে কতভাবে কত গল্পে হানা দিতে পারে, পো-র গল্পগুলো তারই নজির হয়ে আছে। সেই অর্থে প্লটের গল্প প্রায় লেখেনইনি পো, প্লটের কখনও পুনরাবৃত্তি হয় না, একই প্লট নিয়ে দু-বার দু-রকম গল্প লেখা যায় না। কিন্তু খীম-এর গল্প অন্যরকম : একই খীম থেকে বহু ও বহুবিধ রচনার উদ্ভব হয়ে যেতে পারে। পো-র খীম ছিলো যুক্তি আর অযুক্তির দ্বন্দ্ব-যুক্তি যখন সবকিছু দখল ক’রে নিচ্ছে, তখন যুক্তিবহির্ভূত সমস্ত আবেগ অনুভূতি ভাব এসে হানা দিচ্ছে পো-এর গল্পে। সত্যিই উনবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় বা চতুর্থ দশক ছাড়া এ-সব গল্প যেন লেখাই যেতে পারতো না। তথাকথিত ‘সুস্থ বা নর্মাল’ লোকের মাথা খারাপ হয়ে যায় কেমন করে, কত ভাবে, কোন প্রকাশ্য-অপ্ৰকাশ্য উগ্র আবেশ হানা দেয় মানুষকে, তা-ই নিয়ে কত-যে লিখেছেন পো। আর তাঁর এই গল্পগুলোই আকৃষ্ট করেছিলো ইওরোপের বিভিন্ন ভাষায় তার অনুবাদকদের —যাঁরা নিজেরাই নিজের লেখার জন্যে স্বনামধন্য। ফ্রানসে-না, শুধু জুল ভের্ননয়-তীর ভক্ত ছিলেন শার্ল বোদলেয়ার ও স্তেফান মালার্মে-রুশ দেশে ফিয়োদোর দস্তয়েভস্কি। তারা শুধু পো-র ভক্তই নন, নিজের-নিজের ভাষায় পো-র অনুবাদকও। আর-কেউ-কেউ নিশ্চয়ই বলতে চাইবেন—তাদের নিজস্ব রচনায় পো-কে আত্মস্থ ক’রে নেবার জন্যে অনুবাদকে একটি সদুপায় ব’লে ভেবেছিলেন তারা। বোদলেয়ার বা দন্তয়েভস্কি খুঁটিয়ে পড়লে কত জায়গায় যে এডগার অ্যালান পোকে আবিষ্কার করা যাবে, সাহিত্যপাঠকের কাছে সেটা একধরনের রোমহর্ষক গোয়েন্দাগিরি বলে মনে হবে। এখানে পো-র লেখা থেকে বাছাই ক’রে যে-গল্পগুলো নেয়া হয়েছে, সেগুলো যাতে পো-র বিভিন্ন আবেশ ও অভিনিবেশকে ফুটিয়ে তোলে সেটাই লক্ষ্য ছিলো। এককালে রোমাঞ্চ পত্রিকায় এই অনুবাদগুলো বেরিয়েছিলো-তাখন অনেক পাঠক পো-র গল্পের প্রতি তাদের আকর্ষণের কথা ব্যক্ত করেছিলেন। পো-র গল্পের-প্লট নয়- বীমগুলো এমনই, যে, তাদের আকর্ষণ আজও ফুরোয়নি -এমনকী দীর্ঘ কবিতার প্রতি আচমকা আবার নতুন করে আগ্রহ জেগে-ওঠা সত্ত্বেও। সূচিপত্র: রূ মর্গের হত্যারহস্য – ১১ চোরাই চিঠি – ৩৫ সোনাপোকা – ৪৮ ভালদেমার – ৭৫ একটা কালো বেরাল – ৮৪ উতরোল হৃৎপিণ্ড – ৯৩ বোতলে পাওয়া পাণ্ডুলিপি – ৯৯ মরণকূপ ও পেণ্ডুলাম – ১০৮ স্ফিংক্স – ১২০ কালোছায়া - ১২৪
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
t

এই লেখকের আরো বই