চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

ইমাম ইজ্জুদ্দিন ইবনু আবদিস সালাম

    উপমহাদেশের একজন বিখ্যাত চিন্তাবিদ দাবি করেন, খিলাফতে রাশিদার পরপর মুসলিম ইতিহাসে নেমে আসে জাহিলিয়াতের আঁধার। তাঁর মতে, এই জাহিলিয়াতে আলিমরাও জালিম শাসকগোষ্ঠীর সাহায্যকারী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। সন্দেহ নেই আলিমদের অনেকে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন, উল্লেখযোগ্য ইলমি ও রাজনৈতিক ভূমিকা রাখতে পারেননি। তবে যারা মোকাবিলার চেষ্টা করেছেন, রাজনৈতিক ও ইলমি সংস্কারের ডাক দিয়েছেন, তাদের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। আবুল হাসান আলি নদবি রাহ. ইসলামি ইতিহাসের এই সোনালি অধ্যায় সংকলনের অংশ হিসেবে রচনা করেন এক বিখ্যাত গ্রন্থ : সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস। এতে তিনি তুলে ধরতে চেষ্টা করেন আলিমদের সংস্কারমূলক চেষ্টা, রাজনৈতিক ও ইলমি ভূমিকা। আলি নদবি দেখান, আলিমদের এই সংগ্রামী ও সংস্কারমূলক ভূমিকা ইসলামি ইতিহাসের মৌল প্রকৃতির অংশ। আলি নদবির ব্যাখ্যায় বিশ্বাস রাখলে বলতে হবে, হিজরি সপ্তম শতাব্দীতে এই আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় ব্যক্তি ছিলেন ইমাম ইজ্জুদ্দিন ইবনু আবদিস সালাম রাহ.। হিজরি সপ্তম শতক। উম্মতের এক ক্রান্তিকাল—রাজনৈতিক বিভক্তি, নানামুখী ষড়যন্ত্র; মোঙ্গল, ক্রুসেডার, বাতিনিপন্থি ধারাসহ নানামুখী বিপদ ঘিরে রেখেছিল মুসলমানদের। এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তে মুসলমানদের নেতৃত্ব দেন ইমাম ইজ্জুদ্দিন ইবনু আবদিস সালাম। রাজনৈতিক ভূমিকার পাশাপাশি পেশ করেন সংস্কারের পরিপূর্ণ পয়গাম ও প্রস্তাব। বিশেষভাবে সংকলন করেন মাকাসিদে শরিয়াহ। ইতিহাসবিদ ড. শায়খ আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবির দক্ষ হাতে উঠে এসেছে এই মহান ইমামের জীবন, চিন্তা ও অবদানের উল্লেখযোগ্য দিক।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি। ফকিহ, রাজনীতিক ও বিশ্বখ্যাত ইতিহাসগবেষক। ইসলামের ইতিহাসের উপর বিশ্লেষণধর্মী তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনা করে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন। এই মহা মনীষী ১৯৬৩ সনে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা বেনগাজিতেই করেন।

যৌবনের প্রারম্ভেই গাদ্দাফির প্রহসনের শিকার হয়ে শায়খ সাল্লাবি আট বছর বন্দি থাকেন। মুক্তি পাওয়ার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি সাউদি আরব চলে যান। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া ও উসুলুদ্দিন বিভাগ থেকে ১৯৯৩ সনে অনার্স সম্পন্ন করেন। তারপর চলে যান সুদানের উম্মু দুরমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে উসুলুদ্দিন অনুষদের তাফসির ও উলুমুল কুরআন বিভাগ থেকে ১৯৯৬ সনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৯৯ সনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ফিকহুত তামকিন ফিল কুরআনিল কারিম’।

ড. আলি সাল্লাবির রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু বিশ্বখ্যাত ফকিহ ও রাজনীতিক ড. ইউসুফ আল কারজাবি। কারজাবির সান্নিধ্য অর্জনে তিনি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে কাতার গমন করেন।

নতুন ধারায় সিরাত ও ইসলামি ইতিহাসের তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনা করে ড. আলি সাল্লাবি অনুসন্ধিৎসু পাঠকের আস্থা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নবিজির পুর্ণাঙ্গ সিরাত, খুলাফায়ে রাশিদিনের জীবনী, উমাইয়া খিলাফত, আব্বাসি খিলাফত, উসমানি খিলাফতের উত্থান-পতনসহ ইসলামি ইতিহাসের সাড়ে তেরোশ বছরের ইতিহাস তিনি রচনা করেছেন। তা ছাড়া ইসলামি ইতিহাসে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করা ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি আলাদা আলাদা গ্রন্থ রচনা করেছেন।

ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবির রচনা শুধু ইতিহাসের গতানুগতিক ধারাবর্ণনা নয়; তাঁর রচনায় রয়েছে বিশুদ্ধতার প্রামাণিক গ্রহণযোগ্যতা, জটিল-কঠিন বিষয়ের সাবলীল উপস্থাপনা ও ইতিহাসের আঁকবাঁকের সঙ্গে সমকালীন অবস্থার তুলনীয় শিক্ষা। এই মহা মনীষী সিরাত, ইতিহাস, ফিকহ ও উলুমুল কুরআনের উপর আশির অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর রচনাবলি ইংরেজি, তুর্কি, ফরাসি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়ে পৃথিবীর জ্ঞানগবেষকদের হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। 

এই লেখকের আরো বই