চাঁদের বুড়ির বয়স যখন ষোলো (হার্ডকভার)

আমি আমি : এটিএম শামসুজ্জামানের আত্মকথন

    তিনি প্রশ্ন করেন, মানুষ চিড়িয়াখানায় ঢুকেই প্রথম কীসের খাঁচাটার সামনে যায়? উত্তর, 'বাঁদর।' তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রের সেই বাঁদরটা আমি। আমাকে অভিনয়ের সুযোগই দেয়া হয়নি।' তিনি বাংলাদেশের সেই অভিনয়শিল্পী, যাঁর গোটা মহাভারত মুখস্থ। বিস্ময় প্রকাশ করলে বলেন, 'এটাই তো স্বাভাবিক। না পড়লে অভিনয় করব কী করে?' তিনি ষাটের দশকের সুপ্রতিষ্ঠিত কবি, গদ্যলেখক। আহমদ ছফা, সৈয়দ শামসুল হকের মতন সুসাহিত্যিকেরা তাঁর চায়ের আড্ডার নিত্যসঙ্গী। দেশের প্রথম শ্রেণির সকল জাতীয় দৈনিকে তিনি নিয়মিত লিখেছেন। কিন্তু অভিনয়ের খাতায় নাম লেখালেন কেন প্রশ্নে বলেন, 'দুটো ভাতের জন্যে।' অভিনয়ে নাম লেখানোর কারণে উকিল বাবা বের করে দেন বাড়ি থেকে। তাঁর সমস্ত জীবনের বিচিত্র পরিভ্রমণের আত্মকথনমূলক গ্রন্থ এই প্রথম বেরোল 'ছাপাখানার ভূত' থেকে। সঙ্গে থাকছে শিল্পীর লেখা প্রকাশিত-অপ্রকাশিত বেশকিছু কবিতা। দীর্ঘ ৩ বছরের কাজের পর তাঁর মৃত্যুর ১ মাস ১ সপ্তাহ পর বেরোচ্ছে এটিএম শামসুজ্জামানের প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ 'আমি আমি'। দুর্ভাগ্যবশত তিনি দেখে যেতে পারেননি 'আমি আমি'। তবে এ এক মজাদার-বিরল শিল্পীর জীবনগাঁথার দলিল হয়ে রইল।
Cash On Delivery
7 Days Happy Return
Delivery Charge Tk. 50(Online Order)
সাজ্জাদ হুসাইন
বিচিত্র পরিভ্রমণের মধ্য দিয়ে নিজেকে আবিষ্কারের আনন্দ নিয়ে লিখেন সাজ্জাদ হুসাইন। বিরল মানুষ এবং প্রকৃতি তার লেখার প্রাণশক্তি। লেখার জন্য কখনও ঢুকে পড়েন দার্জিলিংয়ের মেঘ-কুয়াশার মধ্যে, অঞ্জন দত্তকে সঙ্গে নিয়ে। সেখানে গিয়ে অদ্ভুত নস্টালজিয়ার মধ্যে ডুবে গিয়ে রচনা করেন অঞ্জন দত্তর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘অঞ্জনযাত্রা’। এরপর আবার থিয়েটারের অঞ্জনকে নিয়ে চলে যান কলকাতার হাতিবাগানের ধসে পড়া থিয়েটারপাড়ায়। সেখানে প্রখর রোদ্দুরে অঞ্জন দত্তকে সাথে করে চলে যান নটী বিনোদিনীর বাড়ির সামনে। রাস্তার মাঝখান বরাবর দাড়িয়ে থাকা গিরীশ ঘোষের বাড়ির কম্পাউন্ডে। ম্যাজিক্যাল থিয়েটার ‘সারকারিনা’য়। সেই সূত্রে ‘ছাপাখানার ভূত’-এর উদ্যোগে ঢাকার মঞ্চে প্রথম মঞ্চস্থ হয় অঞ্জন দত্তর প্রথম নাটক ‘সেলসম্যানের সংসার’। সাজ্জাদ লিখেন অঞ্জন দত্তর নাট্যজীবন নিয়ে দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘নাট্যঞ্জন’। খুড়ে খুড়ে খুজে বের করেন অন্য এক অঞ্জনকে। এরপর সাজ্জাদ বেরিয়ে পড়েন মৃত্যুর অপার রহস্যময়তা জানার সন্ধানে। ঈশ্বরবিশ্বাস, পরকাল, পুনর্জন্ম, আত্মা-শরীর, মহাকাল ছাপিয়ে বের করতে চান কর্মের বিশালতাকে। সেই ভাবনা থেকে ৩ খণ্ডে রচিত হয় নন্দিতজনদের নিয়ে বিশেষ সংকলনগ্রন্থ ‘এখানে মৃত্যু নেই’। এই গ্রন্থের কাজ চলতে চলতে অনন্তের যাত্রায় ছুট দেন সেইসব নন্দিতজনদের কেউ কেউ। চলে যান নবনীতা দেবসেন, মুর্তজা বশীর, নিমাই ঘোষ, নিমাই ভট্টাচার্য, আমজাদ হোসেন… তারা অন্তর্লোকে চলে যান। কিন্তু তারা রয়ে যান কর্মে। আর দিয়ে যান ঈশ্বরবিশ্বাস, মৃত্যুচেতনা, মানবজীবন, পরকাল, পুনর্জন্ম, মহাকাল নিয়ে নিজস্ব ভাবনার কথা। সেগুলো মায়া দিয়ে রচনা করেন সাজ্জাদ। সাজ্জাদ হুসাইন আবিষ্কার করেন কবীর সুমনের গানের বাইরের এক্সাইটিং এক সত্তাকে। তার আত্মদর্শন নিয়ে লিখেছেন ‘কবীরা’। লিখেছেন চারুলতাখ্যাত শিল্পী মাধবী মুখোপাধ্যায়ের থিয়েটার, সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, পূর্ণেন্দু পত্রীসহ নানান বিরল শিল্পীদের সাথে পরিভ্রমণের আদ্যোপান্ত নিয়ে আত্মকথনমূলক গ্রন্থ ‘মাধবীর জন্যে’।তার লেখা বাংলাদেশের কিংবদন্তিতুল্য দুই শিল্পী ববিতা ও এটিএম শামসুজ্জামানকে নিয়ে আত্মকথনমূলক গ্রন্থও প্রকাশিত হয়ে গেছে এরইমধ্যে। বই দুটির নাম যথাক্রমে ‘বিস্ময়ে ববিতা’ ও ‘আমি আমি’।দুই বাংলার কালোত্তীর্ণ গানের দল ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র সকল সদস্যদের সাথে আড্ডা, গল্প, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে করে ৩ বছরের পরিভ্রমণ শেষে রচনা করেন একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ ‘মহীনের ঘোড়াগুলির গান’। এইসব পথ পেরিয়ে সাজ্জাদ হুসাইন এখন বেরিয়ে পড়তে চান অন্য পথে। যেখানে আরও আরও অদ্ভুত মানুষেরা রয়েছে। রয়েছে প্রকৃতি। রয়েছে বিস্ময়। যা ফেলে আসা পথকে নতুন পথের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।চিন্তা-চেতনার উস্কানিতে অক্লান্ত হেটে চলের এই আর্বান পথিক…

এই লেখকের আরো বই